মুজিববর্ষের ঘরে এখনও জ্বলেনি বিদ্যুতের আলো

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৪, ০৪:৩৮ পিএম
মুজিববর্ষের ঘরে এখনও জ্বলেনি বিদ্যুতের আলো

এক বছর পূর্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বর্ষিকী উপলক্ষ্যে এলাকার অসহায় মানুষের মাঝে জমিসহ দু’রুম বিশিষ্ট বসতঘর নির্মাণ করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অসহায় মানুষের মাঝে দেওয়া বসতঘরগুলোতে আজও বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি। ফলে অসহায় মানুষগুলো প্রচণ্ড গরমের কারণে তাদের বসত ঘর ফেলে দিনে রাতে বাগানে গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা রাতের বেলাতে বই নিয়ে পড়ালেখা করতে পারছে না। সে কারণে অনেক পরিবার তাদের বসত ঘর ছেড়ে গাছ তলায় আশ্রয় নিচ্ছে।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যুগিহুদা গ্রামের ভালাইপুর পাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বর্ষিকী উপলক্ষ্যে এলাকার অসহায় ৯টি পরিবারের মাঝে দেওয়া ৯টি বসতঘরগুলোতে গিয়ে ঠিক এমন চিত্র দেখা যায়। অধিকাংশ ঘরে ঝুলছে তালা অন্যত্র চলে গেছে সে ঘরে বসবাসকারীরা। কয়েকটি পরিবার থাকলের ফাঁকা মাঠে ঘরগুলো হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় প্রচণ্ড তাপদাহ, গরমে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়েছে তাদের। অন্যদিকে রয়েছে পানি সংকট টিউবয়েল না থাকায় যেন আরেক ভোগান্তি।

অসহায় মিলন মিয়া জানান, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে রাতে বাড়ি ফিরি। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় রাতের বেলাতে ঘর ছেড়ে বাইরে গাছ তলাতে থাকতে হয়। ছেলে-মেয়েরা বিদ্যুতের কারণে রাতের বেলাতে বই নিয়ে পড়তেও পারে না।

মুজিববর্ষের ঘরে বসবাসকারী রাহেলা বেগম জানান, শেখ হাসিনা আমাদের বসতঘর দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু তার দেওয়া ঘরে এক বছরেও বিদ্যুতের আলো জ্বলেনি। রয়েছে পানির কষ্টও। বিদ্যুতের আলো না থাকায় আমরা রাতের বেলাতে এখানে বসবাস করতে পাচ্ছি না। আমাদের সন্তানরাও বিদ্যুতের আলো না থাকার কারণে বই পড়তেও পারছে না।

ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম হায়দার নান্টু বলেন, বিদ্যুৎ, পানির ব্যবস্থা না করে কীভাবে অসহায় মানুষগুলোকে ঘরে তুলে দেওয়া হলো। এখন তাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে বিদ্যুতের ব্যবস্থা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানান, মুজিববর্ষের ঘর সুষ্ঠুভাবে করে দেওয়ার দায়িত্বটা আমাদের। বিদ্যুৎ বা পানির ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের না। মুজিববর্ষের ঘরের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামিদ জানান, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মুজিববর্ষের ঘরে বসবাসকারীরা প্রচণ্ড গরমের মধ্যে খুবই কষ্টে তারা দিনরাত পার করছেন। আমি কয়েকদিন ধরে মুজিববর্ষের ঘরগুলোতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুতের উপ মহাব্যবস্থাপককে চিঠি দিয়েছি। তার পরও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি মুজিববর্ষের ঘরগুলোতে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে।

পল্লী বিদ্যুতের উপপরিচালক (ডিজিএম) অভিজিৎ সাহা জানান, উপজেলা পরিষদ থেকে আমাদেরকে চিঠি দেওয়ার পর আমরা কাজ শুরু করবো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যায়। 
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তারপরও আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি এখনও বিদ্যুতের সংযোগ কেন দেওয়া হলো না।

ইএইচ