ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
রোববার দুপুরে উপজেলার চালিতাবুনিয়া ও চরমোন্তাজ ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম জোয়ারের তোরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়। এতে অন্তত দশ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। শঙ্কা বাড়ার আগেই ওই সকল মানুষজন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
দুর্যোগ কবলিত এলাকা কলাপাড়া এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দারা মৎস্য ও কৃষি পেশার উপর নির্ভরশীল। যার ফলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের এ সময় এ এলাকার মানুষ বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
দেশীয় জলসীমায় সব ধরনের মাছ ধরার উপর গত ২০ মে থেকে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। সে কারণে উপকূলের জেলেরা এই মুহূর্তে তীরে অবস্থান করছে। একই সাথে রবি শস্য কৃষকরা কর্তন করে নিয়েছে। এখন মাঠে কোনো ফসল না থাকায় কৃষিতেও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
তবে কৃষি বিভাগ বলেছেন, কোথাও কোথাও আউশ ধানের বীজতলা রয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ে সেইগুলো সমস্যা নেই।
দেখা গেছে, সকাল থেকে কোথাও কোথাও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজমান থাকলেও অনেক স্থানে দমকা বাতাসসহ বৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে নদ-নদী ও সাগর উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ আছঁড়ে পড়ছে উপকূলে। সকালের জোয়ারে নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের বাহিরের এলাকার বসতিরা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে ভাটা লাগলে পানি কমেনি। শঙ্কা করা হচ্ছে রাতে জোয়ারে পানি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বলা হয়েছে, কলাপাড়া এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩১টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রশাসনের ভাষ্য, এতে অন্তত ১১ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়ীদের জন্য শুকনো খাবার, ও শিশু খাদ্য বিতরণ চলমান রেখেছে। এছাড়াও এইসব এলাকার নীচু যেসকল মাছের ঘের রয়েছে তা অধিকাংশ প্লাবিত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পায়রা সমুদ্র বন্দর হতে ঘূর্ণিঝড় রেমাল ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে মোংলার নিকট দিয়ে সাগর আইল্যান্ড খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র অতিক্রম করার পরে এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে।
আরএস/ইএইচ