প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জমি পাঁচ বছরেও কপালে জোটেনি ভূমিহীন আলী আহাম্মদের

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৪, ০৪:২০ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জমি পাঁচ বছরেও কপালে জোটেনি ভূমিহীন আলী আহাম্মদের

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের বিশেষ প্রকল্পের আওতায় জেলা প্রশাসনের করা ভূমিহীনের তালিকায় ২০১৮ সালে নাম উঠে হতদরিদ্র আলী আহাম্মদের।

সরকারের করা তালিকায় নাম দেখে বড় আশায় বুক বাঁধেন তিনি। এই বুঝি একটা ভিটার মালিক হবো। সেই আশা আরও পাকাপোক্ত হয় যখন ২০২০ সালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫শতক জায়গার কবুলিয়াত দলিল, নামজারীসহ খতিয়ান আলী আহাম্মদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

কিন্তু বিধিবাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ৫ শতক জমি আর কপালে জোটেনি আলী আহাম্মদের। স্থানীয় এক প্রভাবশালী গিলে খেয়েছেন আলী আহাম্মদকে দেয়া সরকারের সেই ভিটে।

দখল হওয়া সেই ভূমি ফিরে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি তিনি। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে ভূমিহীন আলী আহাম্মদের সঙ্গে।

জানা যায়, ২০১৮ সালে ভূমিহীনের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ মুরাদনগর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ৩৭৭২নং রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে ৫ শতক জমি কবুলিয়াত দলিল মূলে স্থায়ী বন্দোবস্ত পেয়েছেন আলী আহাম্মদ।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আলী আহাম্মদ।

ভুক্তভোগী আলী আহাম্মদ বলেন, ভূমিহীন হিসেবে আমাকে পাঁচ শতক জায়গা ২০২০ সালে কবুলিয়াত দলিল মূলে ৯৯ বছরের জন্য স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া হয়। যার দলিল আমি ২০২০ সালে বুঝে পাই কিন্তু ওই জায়গা আমি দখল বুঝে পাইনি। বন্দোবস্ত পাওয়ার পর থেকে আমার এই জায়গায় প্রভাবশালী এক যুবলীগ নেতার আত্মীয় বাঙ্গরা গ্রামের বাসির মিয়া জোরপূর্বক দখল করেন। রাতারাতি ভেকু দিয়ে আমার জায়গার মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে আমার জায়গা মাছ চাষ শুরু করেন। আমি গরীব মানুষ, তাদের সাথে মোকাবেলা করার মত টাকা আর ক্ষমতা কোনোটাই নাই। অনেকবার ভূমি অফিসে গিয়েও আশ্বাস ছাড়া আর কিছু পাইনি। আর কোন উপায় না পেয়ে গত মাসে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আমি অভিযোগ দায়ের করি।

অভিযুক্ত বাসির মিয়ার কাছে ভূমিহীনের জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলী আহাম্মদকে যেখানে জায়গা দেয়া হয়েছে এর আশেপাশে সবগুলো আমাদের সম্পত্তি। খাস জায়গাটায় আমাদের দাবি সবচেয়ে বেশি। এই জায়গা আমরা পাই। এই বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা এটা বাতিল করেছি। বন্দোবস্ত বাতিলের কাগজ দেখতে চাওয়ায় তিনি গড়িমসি করেও কাগজ দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, আলী আহাম্মদের কাগজপত্র সঠিক রয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে সরেজমিনে দেখার জন্য বলা হয়েছে। দখল না পাওয়ার কারণ কি আর বর্তমানে কে দখলে আছে কীভাবে দখলে আছে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ