বন্যার পানিতে ভাসছে ওসমানীনগর

ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম
বন্যার পানিতে ভাসছে ওসমানীনগর

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে ওসমানীনগরের লক্ষাধিক মানুষ। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ২০২২ সালের বন্যার ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের ওসমানীনগরে আবারও ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার রূপ ধারণ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৮ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ব্যবসা, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও মাছের ফিশারি।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আড়াই শতাধিক গ্রামের মানুষ। কুশিয়ারা নদীর ওসমানীনগর সীমানার শেরপুর পয়েন্ট মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বুধবার সকাল থেকে বিপদ সীমা অতিক্রম করায় নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। ফলে মুহূর্তেই নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পানি বিপদ সীমার ২০ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ২৬০টি গ্রামের গ্রামের ১ লাখ ৮৫ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। গতকাল পর্যন্ত ৪৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৯২৮ জন লোক আশ্রয় নিয়েছে। তবে এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়তে আছে। প্রায় শত কিলোমিটার পাকা সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বানভাসি গ্রামগুলোর লোকজন। গতকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে ৩০ টন চাল ও ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

বন্যার খবর পেয়ে ঈদের দুই দিন পূর্বে এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার্তদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেন স্থানীয় সাংসদ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

এ সময় তিনি বন্যার্তদের সঠিক তালিকা করে বন্যার্তদের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন প্রশাসনকে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতেও উপজেলা পরিষদে তাৎক্ষণিক মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়ে বন্যার্তদের সহযোগিতা করার জন্য সঠিক তালিকা প্রণয়ন করার তাগিদ দেন।

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহেদ আহমদ মূছা, গোলাম রব্বানী সুমন, বদরুল ইসলাম বলেন, বন্যা ২০২২ সালের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এলাকার সকল ইউনিয়নের মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন কিন্তু অনেকে আবার বাড়িঘর ফেলে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠতে চাচ্ছেন না। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার অনুরোধ জানান তারা।

ইএইচ