ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপার(চন্দ্রবোড়া) সাপ মারতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেলে শহরের রাসেল স্কয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নিয়াজ জামান সজীব এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ নিয়ে বলেন, ফরিদপুর কোতোয়ালি এলাকায় কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারেন তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি রাসেল ভাইপার সাপ মারার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। যতজন যে কয়টি সাপ মারতে পারবে প্রত্যেক সাপ প্রতি ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এ সাপ থেকে মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা করার কারণেই এ ঘোষণা দেওয়া হলো।
এ সভায় সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ঝর্ণা হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফসহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঠিক একদিন পর, শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের ওই বক্তব্যের ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এদিকে যেকোনো বন্য প্রাণী নিধন আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানান ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া।
সেইসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে কুদ্দুস ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘ওই বক্তব্য বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থি। এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যায়, তবে এ দায় কে নেবে? বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখুন, সাপের কামড়ে কতজন মারা গেছেন? উল্লেখযোগ্য কোনো সংখ্যা পাওয়া যাবে না। এর চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অনেক বেশি লোক মারা যান।’
পরবর্তীতে এ বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় আওয়ামী লীগ নেতা শাহ মোহাম্মদ ইশতিয়াক।
তিনি বলেন, ‘ওই ঘোষণা যখন দেওয়া তখন এ সংক্রান্ত আইন সম্পর্কে আমার জানা ছিল না । তাছাড়া ওই সভা কোনো পাবলিক জনসভা ছিল না। এটি ছিল জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির ঘরোয়া সমাবেশ। তবে আমরা এর ব্যাখ্যা দিয়ে একটা প্রেস রিলিজ দেব; যাতে বলা হবে রাসেলস ভাইপার জীবিত অবস্থায় ধরে বন বিভাগের কাছে সোপর্দ করা হলে, দেওয়া হবে এ পুরস্কার।’
বিআরইউ