কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির নতুন পানিতে ধরা পড়ছে দেশীয় মাছ

আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৪, ০২:৪২ পিএম
কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির নতুন পানিতে ধরা পড়ছে দেশীয় মাছ

কিশোরগঞ্জে কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার জলাশয় ও ধানের জমিতে নতুন পানি জমেছে। বিশেষ করে খাল-বিল এখন পানিতে টইটম্বুর। ফলে দেশীয় মাছ মিলছে ধানের জমি ও খালবিলের মধ্যে। বড় থেকে ছোট সববয়সী মানুষ এখন দেশীয় মাছ ধরতে নেমেছে।

বিশেষ করে গ্রামগুলোতে এখন মাছ ধরার ধুম লেগেছে। ঠেলা জালি, বাঁশের বেত দিয়ে তৈরি বিশেষ চাই, ম্যাজিক জাল, বঁড়শি নিয়ে মাছ ধরতে নেমেছে মানুষ। বড়দের সাথে সাথে এই মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় ছোটারাও মনের আনন্দে মাছ শিকারে নেমেছে।

জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের নীচু এলাকার খাল-বিল ও কৃষিজমিতে প্রবেশ করছে নতুন পানি। আর পানিতে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আয়োজন করে মাছ ধরছেন মাছ শিকারি ও মৌসুমি জেলেরা। বর্ষার আগমনে বিলে ধরা পড়ছে নানা প্রজাতির মাছ। বৃষ্টির পানিতে দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা আর কচুরিপানা থাকায় নীচু জমিতে বছরে এক ফসল বোরো ধান চাষাবাদ হয়। এ সুযোগে জলাধারগুলোতে নানা প্রজাতির মাছ প্রজনন করে থাকে। ফলে এসব মাছ বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছেন ধান চাষিরা। পাশাপাশি মাছের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে তাদের।

সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পাশে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। ঝাঁকি জাল, টানা জাল, ঠেলা জাল, বেল, পেতে রাখা জাল, চাঁই, বড়শিসহ আরও নাম না জানা অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় জেলেরা।

কেউ পানি ঢোকার জায়গায় স্রোতের পাশ থেকে দূরে উড়িয়ে দিচ্ছেন জাল। এসব জালে দেশি মাছ বেশি ধরা পড়ছে। ট্যাংরা, চান্দা, পুঁটি, চিংড়ি, বাতাসি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। কয়েকদিন আগেও যে জমিতে গরু ঘাস খেয়েছে সেই জমি ঘুরে বেড়াচ্ছে জেলেরা। এই মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চমূল্যে।

দিনের পাশাপাশি অনেকে রাতের আঁধারেও বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছেন। কোঁচা দিয়ে সাধারণত শিং, ট্যাংরা, কই, মাগুর, শোলসহ বড় আকারের মাছ ধরা যায় বলে জানান স্থানীয়রা।

সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের বাদে শোলাকিয়া গ্রামের মাছ শিকারি ইসমাইল মিয়া বলেন, রাস্তার পাশে জমিতে বৃষ্টির নতুন পানি থাকার কারণে নানা ধরনের মাছ জন্মায়। আমরা বর্ষার মৌসুমে এসব জমিতে মাছ ধরে থাকি। ধান আবাদের চেয়ে মাছ চাষেই আমাদের লাভ বেশি হয়।

অপর একজন সোহেল মিয়া জানান, নিজে খাওয়ার জন্য আজকে প্রথম এসেছি মাছ ধরতে। এর আগে জমিতে পানি ছিল না। তাই মাছ ধরতে পারেননি। নতুন পানি এসেছে। তবে এখনও তুলনামূলক কম মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

যশোদল ইউনিয়নের বাজার এলাকার মাছ শিকারি জসিম উদ্দিন বলেন, নতুন পানিতে দেশী মাছ ধরতে নেমেছি। সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। ২-৩ কেজি দেশী মাছ ধরতে পারছি। মাছ ধরার মধ্যে মনের একটা আনন্দ আছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জলাশয়-বিলে ইতোমধ্যে পানি আসতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে জলাশয়গুলোতে ভরে উঠেছে দেশীয় জাতের ছোট-বড় মাছ। জেলেরা মাছ ধরে সংসার চালিয়ে থাকেন। আবার এখন নতুন পানি আসায় মৌসুমি জেলেরাও মাছ ধরছেন।

ইএইচ