ক্ষতিকর আফ্রিকান শামুকের প্রাদুর্ভাবে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

সঞ্জিত চন্দ্র শীল, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৪, ০২:১৯ পিএম
ক্ষতিকর আফ্রিকান শামুকের প্রাদুর্ভাবে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ক্ষতিকর আফ্রিকান জায়ান্ট শামুকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই এলাকার সাধারণ মানুষ এই শামুকের ক্ষতি করার সক্ষমতা সর্ম্পকে অবগত নয়।

এই শামুক বিশ্বের যেসব দেশে ছড়িয়েছে সেসব দেশের জীব বৈচিত্র্যে ও কৃষি ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। এরা ফসলের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বাগান নষ্ট করে ফেলে। সড়কে অবস্থান করায় ছোট যান বাহনের জন্য রয়েছে ঝুঁকি। এ ক্ষতিকর আফ্রিকান শামুক নির্মূল না করা হলে প্রকৃতির জন্য ভয়াবহ হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা হলেই এগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে বের হয়ে আসে। আর দিনের বেলায় অত্যধিক সূর্যালোক থেকে বাচঁতে লুকিয়ে থাকে। অতি বৃষ্টির সময় এরা দালানের দেয়াল বেয়ে উপরে উঠে আশ্রয় নেয়। দালানের জন্যও এ শামুক ক্ষতিকর। এর, মাংস খুবই শক্ত বিধায় পশু-পাখিরাও খেতে চায় না।

সূত্রমতে, বিশ্বের অনেক দেশে এই শামুক শতভাগ নির্মূলের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করছে। এর মধ্যে অন্যতম হল আমেরিকার ফ্লোরিডা, ভারতের কেরেলা এবং কর্ণাটক রাজ্যের কোদাগু জেলা।

ভারত গত তিন দশক ধরে এই শামুকের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করে আসছে। সম্প্রতি তারা সফলতার মুখ দেখতে পেরেছে। বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরাও এই শামুক নির্মূলের বিষয়ে মতামত দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিরীহ এ প্রাণিটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। বিচিত্র নতুন প্রজাতির এ শামুকটি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ছড়িয়েই পড়েনি, হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে কৃষি ব্যবস্থাকে।

জিনারী ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের হিরণ রবি দাস জানান, এই শামুক রাতে হাঁটা চলা করতে দেখা যায়, খুবই ভয়ংকর প্রজাতির শামুক এটি, আমাদের বাড়ির গাছে, ঘরের দেয়ালে ও ঘরের বেড়ায় দলবেঁধে বসে থাকে। বিভিন্ন গাছের পাতা, ফলমূল খেয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে।

সচেতন মহলের ধারণা, ক্ষতিকর শামুকের এ প্রজাতিটি নির্মূলের জন্য এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং যেভাবেই হোক এর প্রজনন ও বৃদ্ধি প্রক্রিয়া নষ্ট করতে হবে। তা না হলে এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এতে গোটা দেশের কৃষি ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে।

এ ব্যাপারে হোসেনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম শাহজাহান কবির জানান, ওই প্রজাতির শামুকটি অনেক ক্ষতিকর। তাই যার সামনেই পড়বে, তাকে মেরে ফেলাই ভালো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইএইচ