প্রচলিত ক্যারিয়ারের জন্য অপেক্ষা না করে দেশের তরুণ-তরুণীরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে নিচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশে ক্যারিয়ার হিসেবে একমাত্র স্মার্ট পেশা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। অনেক আগে থেকেই লাভজনক পেশা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। একটি ল্যাপটপ আর হাইস্পিড ইন্টারনেট পুঁজি করে দুর্গম গ্রামে বসেও লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা পেশায় বেশি ঝুঁকছে।
ঠিক তেমনি সফল জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া মো. ফারুক হোসেন। তার গ্রামের কে.জি.এস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, সরকারি শেখ কামাল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে হাজরাবাড়ী সিরাজুল হক অনার্স কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতক পাস করেন।
মো. ফারুক হোসেনের পিতার নাম মো. আব্দুর রশিদ। বাবা পেশায় একজন সাধারণ কৃষক। পাঁচ ভাই বোনের মাঝে সবার ছোট ফারুক হোসেন এবং একমাত্র ছেলে সন্তান। ২০২০ সালে প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানার পর গুগল এবং ইউটিউব ঘেটে কিছু বিষয় রপ্ত করেন।
মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘শুরুতে কোনো কিছু বুঝতাম না। গুগল ও ইউটিউব ঘেটে শিখতে লাগলাম। সফলতার চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি হতে লাগল। এখনকার মতো তখন এত কোর্সের ব্যবস্থাও ছিল না। অনেক ইচ্ছে ছিল ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ওপর কাজ করব। সেটাতে খুব বেশি সফলতা না আসায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওপর কাজ করতে থাকি। এরপর পর্যায়ক্রমে এসইওর কাজ শিখে এগোতে থাকি।
বর্তমানে তরুণ ফ্রিল্যান্সার ফারুক হোসেন বিভিন্ন স্কিল অর্জন করে হয়েছেন বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত একজন সফল ফ্রিল্যান্সার। তার মাসিক আয় গড়ে প্রায় ২০০০ হাজার ডলার যা বাংলাদেশি (২ লক্ষ টাকা)। মো. ফারুক হোসেন কাজ করছেন Search Engine Optimisation(SEO), Lead generation, Social media marketing হিসাবে। প্রতিনিয়তই চেষ্টা করছেন নতুন কিছু শিখার।
নিজে আয় করার পাশাপাশি তরুণদের বেকারত্ব দূর করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ফারুক। তিনি মনে করেন, দেশের চাকরির বাজারে ঘুরে হতাশ না হয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে একধাপ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
ফারুক হোসেন বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে মূলত বিদেশি কোম্পানি ও ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে ইংরেজি দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে ধৈর্যশীল হতে হবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে এবং ভাষাগত দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য ফ্রিল্যান্সারদের দেশের যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম ডিগ্রি পাস থাকা উচিত। এতে ফ্রিল্যান্সিং জগতের দক্ষতা সহজ হবে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব হবে।
ইএইচ