সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুল্যার মোড় টু বাঁকা-দরগাহপুর সড়কের মধ্যবর্তী ধাপুয়া ব্রিজের নির্মাণ কাজ আবারও বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালিপনা ও গাফিলাতির কারণে এভাবেই দীর্ঘদিন পড়ে আছে ব্রিজের নির্মাণ কাজ। এ সড়কটি দিয়ে আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষসহ পার্শ্ববর্তী পাইকগাছা উপজেলার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে।
বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। ব্রিজের কাজে ধীরগতির কারণে স্থানীয়দের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সাতক্ষীরার অধীনে ২,৯৩,৫৮,৬৮৮ টাকা ব্যয় বরাদ্দে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রোলার ব্রিজ (এসইউপিআরবি) প্রকল্পের আওতায় কাজ শুরু করা হয়। ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিলের মধ্যে ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও অতিরিক্ত ১৫ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি। এতে করে একদিকে যেমন বাড়ছে ভোগান্তি অন্যদিকে বাড়ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও খামখেয়ালিপনায় ইতিপূর্বে এ নির্মাণাধীন ব্রিজে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেছে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর। তৎকালীন সময়ে মৃত্যুর ঘটনায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান একটু নড়েচড়ে বসলেও আবারও কোন কারণ ছাড়াই বন্ধ রেখেছে ব্রিজের নির্মাণ কাজ। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন এ সড়কে চলাচলরত সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চালকরা।
ট্রাকচালক শেখ আতিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় এ সড়কটি দিয়ে ভারী যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে ভয় হয়।
মাহিন্দ্র চালক আশরাফ আলী বলেন, বৃষ্টির সময় ব্রিজের বিকল্প সড়ক চলাচলের উপযোগী থাকে না। ব্রিজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হলে চলাচলে যানবাহন চালকদের আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
দরগাহপুর ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে চলতি বছরের ৬ মার্চ ভোরে ভাঙ্গা ব্রিজের ওয়ালে ধাক্কা লেগে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি গ্রামের নয়ন ঘোষ (১৮) ও একই গ্রামের উইলিয়াম (১৮) নামের দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছিল। তবুও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করছে না। ফলে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশাশুনি উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, বৃষ্টির পানির কারণে বিকল্প রাস্তাটি ভেঙে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিকল্প সড়ক চলাচলের উপযোগী করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির পানি কমলে এবং আবহাওয়া ভালো হলেই দ্রুত সময়ে কাজ করা হবে। ব্রিজের ঢালাইয়ের সব ইকুইপমেন্ট ইতিমধ্যে আনা হয়েছে।
ইএইচ