নন্দীগ্রামে উন্নয়ন বঞ্চিত একটি গ্রামের মানুষ

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
নন্দীগ্রামে উন্নয়ন বঞ্চিত একটি গ্রামের মানুষ

বগুড়া ও নওগাঁ জেলার চারটি উপজেলার মাত্র চার কিলোমিটার জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

স্বাধীনতার পর একাধিকবার সরকার পরিবর্তন হলেও প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। নন্দীগ্রাম উপজেলার থালতা-মাঝগ্রাম ইউনিয়নের বড় চাঙ্গুইর থেকে চাতরাগাড়ী ভায়া বাঘাদহ ব্রিজ পর্যন্ত কাঁচা সড়কটি বছরের পর বছর উন্নয়ন বঞ্চিত।

সামান্য বৃষ্টির পানিতেই হাঁটুসমান কাদায় ঘরবন্দি হয়ে যায় কয়েকটি গ্রামের লাখো মানুষ। উপজেলার শেষ সীমান্তের এই সড়কের সঙ্গে আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া ও নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার যোগাযোগ রয়েছে। কৃষি ও মাছ চাষ নির্ভর গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের সুযোগে প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোট নিয়ে অনেকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু কাঁচা সড়কটির খোঁজ রাখেনি কেউ।

সপ্তাহের বুধবার ও রোববার বড় পশুরহাট বসে রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর। এছাড়া চাপাপুর বাজার ধান বেচাকেনার বড় মোকাম। পশুরহাটে ও ধানের আড়তে লাখো মানুষের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নন্দীগ্রাম উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরের জনপদ সোনাকানিয়া বাজার থেকে বড় চাঙ্গুইর পর্যন্ত কার্পেটিং সড়ক রয়েছে। সেখান থেকে চাতরাগাড়ী ভায়া বাঘাদহ ব্রিজ পর্যন্ত কাঁচা সড়কটি বৃষ্টির পানিতে হাঁটুসমান কাঁদামাটিকে একাকার সড়কে দুর্ভোগে আছেন কৃষক ও শিক্ষার্থীরা। গ্রামের কোনো মানুষ অসুস্থ হলে জরুরি চিকিৎসায় হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগ নেই। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় রোগীকে কোলে ও কাঁধে করে কাঁদামাটির সড়ক পার করতে হয়।

গ্রামের উৎপাদিত ফসল ও পুকুরে চাষ করা মাছ হাট-বাজারে নেওয়ার সময় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। থালতা-মাঝগ্রাম ইউনিয়নের বাঘাদহ, পারঘাটা, ঘুনপাড়া, পারশুন, বিশারপাড়া, আচুয়ারপাড়া, সাড়াদিঘর, বাসলি, আটান, আন্দাসুরা, মির্জাপুরসহ বেশকয়েকটি গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা অবহেলিত।

বিশারপাড়ার আবুল কাশেম, চাতরাগাড়ী বাজারের চা দোকানি এরশাদ আলী ও মাছচাষি হাবিবুর রহমানসহ স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মাত্র চার কিলোমিটার কাঁচা সড়কেই লাখো মানুষের দুর্বলতা। ভোটের সময় এলেই সেই দুর্বলতার সুযোগ নেয় প্রার্থীরা। সড়ক উন্নয়নের দোহাই দিয়ে বারবার ভোটারদের বিশ্বাস অর্জন করে জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হলেও প্রতিশ্রুতির কথা মনে রাখেনি কেউ। আর মাত্র ক’দিন পরই বরাদ্দ আসবে এবং কাজ শুরু হবে, এ কথা যুগযুগ ধরে ঘুরছে জনপ্রতিনিধির মুখে! আর কতবছর পর দুর্ভোগের অবসান ঘটবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন স্থানীয়রা।

থালতামাঝগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, গ্রামের অধিকাংশ রাস্তার ইট সোলিংসহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এলজিইডির সড়ক তো আর ইউনিয়নের পরিষদের না। মেইন রাস্তাগুলোর উন্নয়ন করবে এলজিইডি।

এ প্রসঙ্গে বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রেজাউল করিম তানসেন জানান, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে প্রতিটি গ্রাম শহরে উন্নতি হচ্ছে। বড় চাঙ্গুইর থেকে চাতরাগাড়ী ভায়া বাঘাদহ ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ, সেটি অবহেলিত থাকতে দেব না। গ্রামের মানুষ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছেন। সড়কটির উন্নয়নের জন্য যথাযথ দপ্তরে তালিকা পাঠিয়েছি এবং সংসদে বক্তব্যে বলেছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের উন্নয়ন হবে।

ইএইচ