চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোরাম মেহেদী হাসান বলেছেন, খাল, বিল, পুকুর, নদী, প্লাবনভূমি, খাঁচায় চাষকৃত মৎস্য সম্পদ চাঁদপুর জেলাকে সমৃদ্ধ করেছে। এর মধ্যে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে জেলার মাছের চাহিদা ছিল ৬৮ হাজার ৪৬৬ মেট্টিক টন। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০.৬২ মেট্টিক টন এবং উদ্বৃত্ত ছিল ৪৭ হাজার ৬২৪.৬২ মেট্টিক টন।
একই অর্থ বছরে শুধুমাত্র ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ হাজার ৩২৬ মেট্টিক টন।
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা ও সমৃদ্ধ অর্জনে মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের ১১টি দেশের মধ্যে ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ প্রথম এবং শতভাগ ইলিশ উৎপাদনের মধ্যে বাংলাদেশে ৮৬ ভাগ ইলিশ মাছ উৎপাদন হয়। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশের প্রতি সবার দৃষ্টি থাকে। সম্প্রতি অনলাইনে ইলিশ বিক্রিতে প্রতারণা অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে অনেকে ফেসবুকে পেজ খুলে এই সুযোগ নিচ্ছেন। জেলার সুনাম রক্ষার জন্য আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, আমাদের নদীতে শুধুমাত্র ইলিশই নয়, সব ধরনের মাছের উৎপাদন হয়। খামারিরাও বহু ধরনের মাছ উৎপাদন করেন। তবে এই জেলার মানুষ নদীর মাছ খেতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেন। আর নানা কারণে নদীতে মাছের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব বিষয়ে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কাজ করছে।
তিনি বলেন, জেলায় নিবন্ধিত মৎস্যজীবী (জেলে) সংখ্যা হচ্ছে ৪৭ হাজার ২৪৯ জন।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর ও বৈধ জাল বিতরণ করা হচ্ছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে মেঘনা নদী উপকূলীয় মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলায় ৫শ’ জেলেকে বকনা বাছুর, গ্রুপ করে ২৭৬জন জেলেকে ৯২টি বৈধ সুতার জাল ও ৩৫০জন সুফলভোগী জেলেকে তিন দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা ও সমৃদ্ধ অর্জনের বিষয়ে মতামত রেখে বক্তব্য দেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন, সাংবাদিক আলম পলাশ, ফারুক আহমেদ লিটন, মুহাম্মদ মাসুদ আলম।
এছাড়াও বক্তব্য দেন, জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক তছলিম বেপারী, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মালেক দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মো. মানিক দেওয়ান, মৎস্য খামারি মো. বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।
ইএইচ