ফরিদপুরে সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদকে বয়কটের ঘোষণা

ফরিদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম
ফরিদপুরে সংসদ সদস্য  এ.কে. আজাদকে বয়কটের ঘোষণা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চলমান পরিস্থিতির জন্য ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদ ওরফে এ.কে. আজাদকে দোষারোপ করে বয়কট ও প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। তারা এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাধ্যমে উসকানি ও টাকা ছড়ানোর অভিযোগও করেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ে এক সমাবেশে এসব কথা তুলে ধরেন ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরীসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা।

এদিন এই এলাকায় একই সময়ে সারাদেশে গণহত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে দোয়া প্রার্থনা ও গণমিছিলের ঘোষণা দেয় ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ এক পর্যায়ে আশেপাশে থাকা সাধারণ মানুষকেও সরিয়ে দেন। পরে সেখানে নিহতদের জন্য দোয়া ও সমাবেশ করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে।

এতে যোগ দেন ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরী।

বক্তব্যকালে তিনি ফরিদপুর-৩ (সদর) সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদ ওরফে এ.কে. আজাদকে উদ্দেশ্যে করে বলেন- ‘আপনারা যার পেছনে আছেন, তার পত্রিকা সমকাল ও চ্যানেল২৪ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করছে। যে সংসদ সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগে সে আওয়ামী লীগের লোক হতে পারে না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক হতে পারে না। আপনাদের আহ্বান করব, এই লোকের পেছনে থাকবেন না।

এ সময় এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আন্দোলকারীদের মধ্যে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ।

তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের সংসদ সদস্য তাঁর মিডিয়া দিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে উস্কিয়ে দিচ্ছে, যত রকমের অরাজকতা হচ্ছে তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে, এই সংসদ সদস্য এই আন্দোলনে এবং ছাত্রসমাজকে প্রচুর পরিমাণে টাকা দিচ্ছেন। এই আন্দোলন চলার পেছনে উনার ভূমিকা রয়েছে। অতএব, ফরিদপুরের জনগণ উনার থেকে সাবধান, উনাকে বয়কট করেন। প্রয়োজনে সামনে উনাকে আমরা প্রতিহত করব।’

এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক। তিনিও সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বলেন, ‘৭ই জানুয়ারি নির্বাচনের সময় বিএনপি জামায়াতের লোক নিয়ে আপনি বড় বড় কথা বলেছেন। একটা ওয়াদাও আপনি পূরণ করেন নাই। আপনি মিথ্যাবাদী, আপনি মুনাফেক। এই লোকের আশেপাশে যারা আছেন, তাঁরা উনার সঙ্গ ত্যাগ করেন। উনার চেহারা আজ উন্মোচিত হয়েছে।

এই তিনজনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়। পরে সারাদেশে নিহতদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় জেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদের মুঠোফোনে কল দিলে কেটে দেন। এরপর কয়েক দফায় চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এর একটি গ্রুপ সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদ পন্থী এবং অপর পক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক পন্থি। ওই নির্বাচনে শামীম হক আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে হেরে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিষোদগার করতে দেখা গেছে। এমনকি বিভিন্ন সময় দ্বন্ধেও জড়িয়ে পড়েন এই দুটি গ্রুপ।

ইএইচ