রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বরে সি ব্লকের ২ নাম্বার রোডে নিজ বাসার সামনে গত ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে চায়ের আড্ডায় বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছিলেন যুবদল নেতা এম নূরে আলম চৌধুরী। আলোচনায় ছিলো কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ দেশের সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ইস্যু। তবে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ করে সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে তিন ব্যক্তি এসে নূরে আলমকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তুলে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা নিজেদের পল্লবী থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য বলে দাবি করেন।
নূরে আলম চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ২৯ জুলাই রাত সাড়ে আটটার দিকে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা জামাতের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বলে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। মূলত আমরা যখন গল্প করছিলাম তখন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগের এক নেতা আমার বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেয় আমি জামায়াতের লোক। পুলিশ আমার মোবাইলে বিএনপির কিছু ছবি দেখে আমাকে আটক করে।
তিনি আরও বলেন, আমাকে যারা আটক করেছিলো তাদের তিনজন পল্লবী থানার এসআই, একজন সিপাহি ও তাদের সঙ্গে আরেকজন সোর্স ছিলো। তাদের নিজেদের মধ্যে ফিসফিসিয়ে বলা কিছু কথা আমি শুনতে পাই। তারা বলছিলো, আমাকে এনকাউন্টার করবে। এমন কথা শুনে ভয় আর আতঙ্কে কলিজা শুকিয়ে আসতে থাকে। তখন বারবার স্ত্রী-সন্তানের কথা মনে পড়ছিলো। আমাকে মেরে ফেললে আমার সন্তানদের কী হবে?
পরবর্তীতে ঘুরতে-ঘুরতে আমাকে বিহারী কলোনির দিকে নিয়ে যায় তারা। এসময় হঠাৎ পথে দেখা হয় বন্ধু আল আমিন বাবুর সঙ্গে। বাবু তাদের থামিয়ে দেয়। বাবু তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করে বলেন- ‘দেখেন ও এখানকার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী। আপনারা ভুল করছেন।’ তারা বাবুকে গালি দিয়ে বলে- ‘তোর বন্ধুকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে বিশ লাখ টাকা লাগবে। এভাবে দরকষাকষি করতে করতে দশ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় নামে। আমি তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দেই। তবে সেই সময় আমার পেরেশানি দেখে বাবু বললো, টেনশন করিস না। বাসায় যা বাকিটা আমি দেখতেছি। পরবর্তীতে আরো টাকা দিয়ে বাবু আমাকে প্রাণে বাঁচায়।’
উল্লেখ্য, এম নূরে আলম চৌধুরী দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ঢাকার মিরপুরে ব্যবসা করছেন। এক সময় তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের উত্তর পোঁয়া গ্রামে। নূরে আলম বর্তমানে মানসিকভাবে অসুস্থ। মৃত্যু আতঙ্ক এখনও তাকে তাড়া করে ফিরে।
আরএস