উপজেলা প্রশাসনের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

বিজয়নগরে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম
উপজেলা প্রশাসনের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় ছাত্রছাত্রীরা গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে চাইলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আপত্তির কারণে উপস্থিত সাংবাদিকরা বেড়িয়ে যান। পরে হলরুমে দরজা লাগিয়ে ৩ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।

আন্দোলনের সময়ে তাদের ওপর হামলা, নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও সিস্টেমের পরিবর্তন চেয়ে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ বন্ধ করে বিজয়নগরকে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

ছাত্রছাত্রীর পক্ষে মাহবির আহমেদ মাহিন বলেন, আমরা এমন একটা রাষ্ট্র তৈরি করতে চাই যেখানে ন্যায় বিচার থাকবে, সুশাসন থাকবে। আপনারা সকলেই এগিয়ে আসুন। আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগে ঠিক করতে চাই। আপনারা সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে কাজ না করে এই সময়ে অন্তত মানবিকতার জায়গা থেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এগিয়ে আসুন এবং দেশের জন্য কাজ করুন।

প্রশাসননের উদ্দেশ্যে মহিন বলেন, আপনাদের কারো কারো হাতে আমাদের কোনো না কোনো ভাইয়ের রক্ত লেগে আছে। আপনারা জড়িতরা কেউ দায় এড়াতে চেষ্টা করবেন না। আপনারা যে যেখানে যেভাবে অন্যায় করেছেন তার বিচার স্বাধীন বাংলাদেশে হবে। তবে সরাসরি যারা যুক্ত ছিলেন, যাদের হাত আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত, তাদের মাঠে পাঠাবেন না।

তিনি আরও বলেন, এতোদিন আপনারা স্বৈরাচারের লেজুড়বৃত্তি হয়ে কাজ করেছেন। তবে আগামীতে কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি হয়ে কাজ করবেন না। সমন্বয়করা জেলা প্রশাসকসহ উপস্থিত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যে সরকারই আসুক, কেউ যেন তাদের গোলামি না করেন। সব কিছু তার নিজস্ব গতিতে চলবে। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের পাশে এসে দাঁড়ানোর কথা বলেন। বৈষম্য বিরোধীদের স্মরণ করা যেন আদর্শিক হয় উল্লেখ করে তারা আরো বলেন, দীর্ঘ পনেরো বছরসহ ৫৩ বছরের জঞ্জাল তারা পরিষ্কার করবেন। আর এগুলো পরিষ্কার করা পর্যন্ত কাজ করে যাবেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, দায় আমাদের সকলের আছে। তবে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যে কাজ করা দরকার আমরা তাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মাহবুবুল হক, সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার ওয়ালিউর, বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার মো. মনিরুল ইসলামসহ ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে কৃষিবিদ সাইনুর রহমান হৃদয়, আকিব জাবেদ মুন্না, মাহবির আহমেদ মাহিন, ওয়াকিল সরকার ফাহাদ, ওয়ায়েস আহমেদ, মুক্তাদির দস্তগীর, ইসমাইল আহমেদ, জিসান আহমেদ, হৃদয় হক, শাহনেওয়াজসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্রছাত্রী।

ইএইচ