সরকার পরিবর্তনের পরে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমের স্থবির অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পটুয়াখালীতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক মো. নুর কুতুবুল আলম ও পুলিশ সুপার মো. আব্দুস সালামসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্রিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা।
এ সময় জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ জেলার বিভিন্ন খেয়াঘাট, মন্দির, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগণসহ সনাতন ধর্মীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করতে সবধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক মো. নুর কুতুবুল আলম বলেন, পটুয়াখালী শহরের অনেকগুলি মন্দির ইতোমধ্যে আমরা পরিদর্শন করেছি, আমার সাথে পুলিশ সুপার, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে গুজব রয়েছে, গুজবের কারণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তাদের মনে একটা আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এইগুলি যে আসলে পটুয়াখালী জেলায় কোনোকিছু হয়নি, এখানে ভয়ের কিছু নাই তারা নির্ভয়ে তাদের ধর্মচর্চা করতে পারেন, জীবন যাপন করতে পারেন। এই বিষয়টি তাদের জানান দেয়ার জন্য আমরা সবাই একসাথে এসেছি, তাদের সুখ-দুঃখের ব্যাপারগুলি আমরা জানলাম। তাদেরকে আমরা আশ্বস্ত করলাম যে আমরা মাঠে আছি, সেনাবাহিনী মাঠে আছে, পুলিশবাহিনী কাজ করছে, সাংবাদিক ভাইরা সচেতন রয়েছে।
আমরা হিন্দু ধর্মবলাম্বী ভাইদের পাশে আছি, তারা এদেশের নাগরিক, আমাদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই, তারা ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। এ বিষয়টি জানান দেয়ার জন্য আশ্বস্ত করার জন্য আমরা এসেছি। যে কয়টি জায়গায় গিয়েছি সবখানে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশ পেয়েছি, কারও কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি যে তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, উপাসনলয়ে বা বাড়িতে কোন রকম আক্রমণ বা হুমকি দেয়া হয়েছে কিনা।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুস সালাম জানান, ৫ তারিখের পর থেকে পটুয়াখালীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ভাল থাকে তা এখানকার আপামর জনসাধারণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রক্ষা করেছেন। আমাদের কিছুটা সীমাবদ্ধতার কারণে আউট মুভমেন্ট কম ছিল গতকাল থেকে স্বাভাবিক মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। থানা পুলিশ তিন চারদিন আগে থেকেই কাজ শুরু করেছে। প্রত্যেকদিনই আমরা বিচ্ছিন্নভাবে বের হই, আজকে আমরা জেলা প্রশাসক, আমাদের সহকর্মীসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা সম্মিলিত ভাবে বের হয়েছি। যাতে বিভিন্ন জায়গায় গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা হচ্ছে। আমরা আজ পটুয়াখালী শহরের গুরুত্বপূর্ণ সকল মন্দির সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ সব খেয়াঘাট, লঞ্চঘাট পরিদর্শন করেছি, কোথাও থেকে কোন দুর্ঘটনার খবর আসেনি।
সবাই বলেছে, তারা শান্তিতে আছে এবং তাদের উপর কোন আক্রমণ বা ভয়ভীতির ঘটনা ঘটেনি। সেক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরসহ সকলে ভাল আছেন।
তিনি জানান- পটুয়াখালীতে ৯টি থানা, চারটি তদন্ত কেন্দ্র, ১টি ফাঁড়ি রয়েছে শুরু থেকে সকল জনবল আমাদের থানা ফাঁড়ি বা পুলিশ লাইনে রয়েছে। আমাদের কোন স্থাপনার কোন ক্ষতি হয়নি, গাড়ি, অস্ত্র, গুলি, পুলিশের সকল স্থাপনা অক্ষত রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্রি বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের ৬ দিন পর আজ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মিডিয়ার সদস্যসহ আমরা সবাই মিলে একত্রে বের হয়ে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক রয়েছে তা জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বের হয়েছি। আজ আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে সকল মন্দির, খেয়াঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করেছি।
ইএইচ