রংপুর সিটির ২০ কাউন্সিলর আত্মগোপনে, ভোগান্তিতে নগরবাসী

রংপুর ব্যুরো প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
রংপুর সিটির ২০ কাউন্সিলর আত্মগোপনে, ভোগান্তিতে নগরবাসী

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে আওয়ামীপন্থি ২০ জন কাউন্সিলর আত্মগোপনে রয়েছেন। এতে করে লাখ লাখ মানুষ নাগরিক সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন।

দেশের দ্বিতীয় বৃহতত্তম সিটি করপোরেশন এটি। যার ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত।

রংপুর সিটি করপোরেশন কার্যালয় ও বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে নগরবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী  কোটা সংস্কার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তোপে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সারাদেশের মতো রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ জন কাউন্সিলর এবং ৬ জন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং বিভিন্ন পদে থাকার কারণে জনরোষের আশঙ্কায় আত্মগোপন করেছেন।

ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জরুরি প্রয়োজনে তাদের কার্যালয়ে ও সিটি করপোরেশনে গিয়েও দেখা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের বসবাস। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মেট্রোপলিটন পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি হারাধন রায় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়ে মারা যান।

এ ছাড়াও রংপুর মেট্রোপলিটান আওয়ামী লীগের সভাপতি রংপুর সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র তৌহিদুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা আরমান আত্মগোপনে আছেন। একইভাবে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কউন্সিলর গোলাম সরোয়ার মির্জা, ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশেক আলী, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু হোসেন চঞ্চল, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুর রহমান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল গাফ্ফার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইঞ্জিনিয়ার শাহাদত হোসেন, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের হারুনর রশীদ, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর আলম তোতা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাদত হোসেনসহ আরও কয়েকজন কাউন্সিলর আত্মগোপনে আছেন। এ ছাড়াও ৬ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর গা ঢাকা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন জানান, আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থক কাউন্সিলররা অফিসেও আসেন না সিটি কর্পোরেশন আসেন না। তারা ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর থেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। কবে আসবেন জানি না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মঞ্জু বলেন, প্রায় ২০ জনের মতো কাউন্সিলরকে আমরা দেখতে পাচ্ছি না তারা আত্মগোপন রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতির কারণে নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন নগরবাসী। তার পরেও প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে তার কাছে আসলে চেষ্টা করছেন সেবা দিতে।

বিষয়টি নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আমার সংবাদকে জানান, প্রায় ২০ জনের মতো কাউন্সিলর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে অফিসে আসছেন না। এতে অনেকেই নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু আইন অনুযায়ী কিছুই করতে পারছি না। পরপর তিনটা সভায় অনুপস্থিত থাকলে সাসপেন্ড করা যায়। অন্যদের দায়িত্ব দেয়া যায়। তা ছাড়া প্রতিটা ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের আলাদা অফিস করে দেয়া আছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

ইএইচ