কুমিল্লায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে একজনকে কুপিয়ে হত্যা

কুমিল্লা প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম
কুমিল্লায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে একজনকে কুপিয়ে হত্যা

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা।

শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলা ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া বাজারে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত বিএনপির সমর্থকের নাম ছিদ্দিকুর রহমান ( ৪৫)। তিনি সাইচাপাড়া গাবুদ্ধি বাড়ির মৃত আ. কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন অটোচালক ছিলেন।

এ ঘটনায় অন্তত দুপক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহতদেরকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম  মোতায়েন করা হয়েছে।  

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা  মো. আনোয়ার হোসেন, মামুন ভুঁইয়া ও মো.আয়েজ মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর এলাকার ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ আনন্দ মিছিল বের করেন। আনন্দ মিছিলের এক পর্যায়ে সাইচাপাড়া বাজারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির হোসেনের ব্যক্তিগত অফিস থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদের ছবি ভাঙচুর করেন। ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় জেরে দুই দিন পর গাবুদ্ধি বাড়ির সামাউল নামে এক ছাত্রকে এলোপাথাড়ি মারধর করে আমির মেম্বারের  ছেলে জুয়েল ও তার  লোকজন। পরে সামাউলের লোকজন দেবিদ্বার থানায় আমির মেম্বার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের খবর পেয়ে আমিরের লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

এ ঘটনা মীমাংসা জন্য স্থানীয় ময়নাল হাজারীর মধ্যস্থতায় শুক্রবার সকাল ৮টায় সাইচাপাড়া বাজারে দুই পক্ষের সালিশ বৈঠকে ডাকেন। বাজারের সালিশ বৈঠকে গাবুদ্ধি বাড়ির চারজন মুরুব্বি উপস্থিত হলে আমির মেম্বার তার ২০ থেকে ৩০ জন লোক নিয়ে ওই সালিশ বৈঠকে উপস্থিত হয়ে গাবুদ্ধি বাড়ি থেকে আসা চারজন সালিশদারকে  বেদম মারধর করে। সালিশে মারধরে খবর পেয়ে গাবুদ্ধি বাড়ির ৪৫-৫০ জন  জড়ো হয়ে বাজারে এসে আমির মেম্বার ও লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমিরের লোকজন প্রকাশ্যে ছিদ্দিকুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আমির হোসেন মেম্বার বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। এখন শত্রুতা করে সবাই আমার নাম বললে আমি কি করব। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণপাড়ায় আছি।

দেবিদ্বার থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. নয়ন মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ছাত্র-জনতার আনন্দ মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় আমির হোসেন মেম্বারের অফিস ছবি ভাঙচুরের ঘটনার জেরে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে একটি সালিশ বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছিদ্দিক নামে বিএনপির এক সমর্থক নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম রয়েছে।

ইএইচ