সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও দিনাজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৭৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বোচাগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক ছাত্রের করা ওই মামলায় বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আফসার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার সন্ধ্যার পর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আফসার আলী ৫ আগস্ট তার বাসায় হামলার অভিযোগে থানায় মামলা করতে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা তাকে আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এ সময় তিনি ছাত্র-জনতার চাপের মুখে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন।
মামলার আসামিদের মধ্যে সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (৫৫) ছাড়াও তার পিএ মো. আব্দুল বাশার (৩৭), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আফসার আলী (৬১), পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাউসার (৪৫), উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ঈশান ইসলাম (৩৩), উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ আলী তুহিন (৩৯), বোচাগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন (৩৮) সহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে মামলার বাদী রেলকোলনী পাড়ার মো. ফজল আলীর ছেলে ছাত্র মো. ফয়সাল মোস্তাক মামলায় উল্লেখ করেছেন, ১৮ জুলাই দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা সেতাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি সেতাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে পৌঁছালে সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোচগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আফসার আলীর নির্দেশে দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইট পাটকেল, লোহার রড নিয়ে মিছিলে হামলা করে মারপিটসহ ছাত্রীদের শ্লীলতাহানী ঘটায়। ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাণ রক্ষার জন্য আত্মগোপনে থাকায় চিকিৎসাও করাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী মো. ফয়সাল মোস্তাক বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আফসার আলী শুক্রবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করার জন্য বোচাগঞ্জ থানায় যান। খবর পেয়ে ছাত্র-জনতা তাকে থানার ভেতরে ঘিরে ফেলে। এ সময় ছাত্র-জনতা তাকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগের জন্য চাপ দিলে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি উপস্থিত জনতার সামনে মাইকে ঘোষণা দেন যে, তিনি পদত্যাগ করবেন। পরে সেনাবাহিনীর গাড়ি গেলে তাকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ওই রাতেই মামলা করা হয়।
বোচাগঞ্জ থানার ওসি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক রাসেল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটক উপজেলা চেয়ারম্যানকে ছাত্রদের মিছিলে হামলা করার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে। বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
ইএইচ