প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রেজুলেশন জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রেজুলেশন জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বান্ধাবাড়ি জেপিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হাওলাদার মোহাম্মদ ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ আমলি আদালতে রেজুলেশন জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।

অপরদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে ঐ প্রধান শিক্ষককে রেজুলেশন খাতাসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হলেও তিনি রেজুলেশন খাতা দেখাতে টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার সরেজমিনে বান্ধাবাড়ি জেপিপি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। বিগত ২০২৩ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর ম্যানেজিং কমিটি ঐ বিদ্যালয়ের ইংরেজি সহকারী শিক্ষকের যোগদান অনুমোদন ও সহকারী কম্পিউটার অপারেটরের চাকরি স্থানীকরণ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রেজুলেশন লিখেন।

প্রধান শিক্ষক ঐ তারিখের আলোচ্য বিষয়ে আমিনুল হক পাইকের দোকান ঘর ভাড়ার টাকা সমন্বয় প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি জালিয়াতি করেন।

অপরদিকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের খসড়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও দুইজন শিক্ষকের নাম এমপিও থেকে কর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

ঐ রেজুলেশন জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক পাইকের বিরুদ্ধে মামলা উত্তোলনের বিষয়টি লিখে নেন এবং আমিনুল হক পাইকের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে মামলাটি প্রত্যাহার করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ আমলি আদালতে দোকান ঘর ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ ও রেজুলেশন জালিয়াতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক মহাসিন তালুকদারকে আসামি করে পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।

এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনি আপনাদের কিছু বলতে পারবো না। তবে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি মামলাটি প্রত্যাহার করেছি।

সহকারী শিক্ষক মহাসিন তালুকদার ও প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ম্যানেজিং কমিটির মিটিং এ রেজুলেশন লিখার আগেই প্রধান শিক্ষক আমাদের স্বাক্ষর নেয়। পরে রেজুলেশনে কি লেখা হয় তাহা আমরা জানি না।

জেপিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মো. হান্নান মোল্লা বলেন, রেজুলেশন করার সময় আমি ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলাম। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ও ৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে রেজুলেশনে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ছিলাম তাহার ফটোকপি আমার কাছে আছে। ঐ তারিখে প্রধান শিক্ষক আরো দুটি রেজুলেশন জালিয়াতি করে বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ করে।

বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, পূর্বের ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন সম্পর্কে আমি অবগত নেই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সিদ্দিকুর নুর আলম বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে রেজুলেশন খাতা সহ কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছি। তিনি আমার নোটিশ গ্রহণ করেও কোনো জবাব দাখিল করেননি। এব্যাপারে তদন্ত চলছে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ