ক্ষমতার পালাবদলে সারা দেশ উত্তাল। সারাদেশের মতো উত্তাল ছিল দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম ব্যাবসায়িক উপজেলা হিসাবে স্বীকৃত আলমডাঙ্গা উপজেলা।
দীর্ঘদিন এর রাজনৈতিক একপক্ষীয় ক্ষমতায়নে হঠাৎ করে হাওয়া পাল্টে গেলে গা ঢাকা দেয় উপজেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। ফলে স্থবির হয়ে পড়ে থানার কার্যক্রম।
দেশের এই পরিস্থিতিতে নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা দৃঢ় হাতে সামাল দিয়েছেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস। ৩৫তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া এই কর্মকর্তা গত বছরের জুন মাসে আলমডাঙ্গা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন।
গত ৫ তারিখ ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে এলাকা ছাড়েন উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়রসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। থানার অফিসার ইনচার্জ কেউ ছিলেন না থানায়। মূল ফটকে তালা দিয়ে ভিতরে অবস্থান করে পুলিশ সদস্যরা।
সম্পূর্ণ অভিভাবকশূন্য উপজেলার সকল দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিয়ে দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছেন স্নিগ্ধা দাস।
৫ ও ৬ তারিখে কিছু কিছু জায়গায় দুর্বৃত্তরা কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে ও বিগত সরকারের কিছু নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটলেও সব রাজনৈতিক পক্ষকে নিয়ে বসে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তিনি।
সেই সাথে সারাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের গুজব ছড়ালে আলমডাঙ্গায় যেন কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তাই সকল ধর্মের নেতাদের নিয়ে সম্প্রতি বজায় রাখার জন্য মতবিনিময় করেন।
ব্যাবসায়িক নেতা ও বণিক সমিতির নেতাদের নিয়ে নিশ্চিত করেন মার্কেটগুলোর নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক ব্যাবসায়িক কর্যক্রম।
শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বৃহত্তর কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম রহমান সিঞ্জুল জানান, দেশের এই সময় আমাদের ব্যাবসা কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। সেই সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ছাত্রীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন এ সহযোগিতা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাসের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে আলমডাঙ্গা উপজেলাবাসী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর নেতা নূর মোহাম্মদ টিপু জানান, স্নিগ্ধা দাস এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের সহযোগিতা চান। আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতার মাধ্যমে তার আন্তরিক চেষ্টাকে বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যতম সমন্বয়ক মুসাব জানান, ইউএনও আমাদের শহর পরিষ্কার, ডাস্টবিন স্থাপন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, গ্রাফিতি অঙ্কনসহ সকল কাজের উৎসাহ প্রদান করেছেন এবং আমাদের আগামী দিনের কার্যক্রমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাসের এই কার্যক্রম এ উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী কর্মকর্তা, বিশেষভাবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ কাফীর অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।
ইউএনও স্নিগ্ধা দাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিট থেকে বিডিএস সম্পন্ন করে ৩৫তম বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ব্যক্তি জীবনে ২ সন্তানের জননী তিনি। স্বামী জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসাবে কর্মরত আছেন।
ইএইচ