কুড়িগ্রাম পৌর শহরের বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মিশুক স্ট্যান্ড।
বিভিন্ন মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা এসব স্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামা ও মালামাল টানাটানির কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ নাগরিক চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
শহরের প্রবেশমুখ ত্রিমোহনী, ধরলা ব্রিজ ও জজ কোর্ট মোড় থাকে অটোরিকশা ও মিশুকের দখলে।
এছাড়াও কলেজ মোড়, নতুন বাজার, শাপলা চত্বর থেকে পৌরসভার প্রবেশ গেট, ঘোষপাড়া, দাদা মোড়সহ প্রধান সড়কের অধিকাংশ জায়গা অবৈধ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চাপে অন্যান্য যান নিয়ে চলাচল কঠিন হয়ে পড়ছে।
বাস-ট্রাকসহ বড় যানবাহনের ধীর গতিতে চলাচলের জায়গা মিললেও মোটরসাইকেল ও সাইকেল চালকদের বেকায়দায় পড়তে হয়। পথচারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছে না। প্রতিদিনই শহরে ঘটছে ছোট খাটো দুর্ঘটনা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের প্রবেশ পথ নতুন বাজার ও ঘোষপাড়ায় স্ট্যান্ড থাকায় প্রায়শই জরুরি রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে বেগ পেতে হয়।
অটোরিকশাগুলো এসব স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে একটু পর পর সড়কের মধ্যে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করে থাকে। ফলে স্কুল, কলেজ ও অফিসের সময়গুলোতে রাস্তায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। অনেক সময় স্কুলকলেজের শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষজন যানজটে পড়ে গন্তব্যে সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছে না।
দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে এসকল অবৈধ যানের সংখ্যা।
শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও যানবাহনগুলো প্রায়শই অমান্য করছে ট্রাফিক আইন। ট্রাফিক বিভাগ থেকে ব্যারিকেড দিয়ে একমুখী যান চলাচল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু শাপলা চত্বর এলাকায় তিনদিকে অটোস্ট্যান্ড হওয়ায় অন্যান্য বড় যানবাহনগুলো সহজে যেতে পারে না। ফলে দীর্ঘসময় ধরে এই এলাকায় যানজটের চিত্র লক্ষ্য করা যায়। রাস্তায় ব্যারিকেড থাকলেও এখানে অনেকেই আইনের তোয়াক্কা না করে ব্যারিকেডের মাঝ দিয়ে যানবাহন পারাপার করে থাকে।
শিক্ষার্থী মেহেদী ইসলাম বলেন, টিউশনি শেষ করে সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারি না যানজটের কারণে। রাস্তায় অতিরিক্ত রিকশার কারণে সাইকেল চালাতেও অসুবিধা হয়।
নাগেশ্বরী থেকে জেলা শহরে দাপ্তরিক কাজে এসে তীব্র যানজটে নাকাল হয়ে ফিরছিলেন আব্দুস সালাম বলেন, কৃষক, গ্রাম্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার লোকজন কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ছে। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
কুড়িগ্রাম সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব নীলু বলেন, ভেহিকেল অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যাটারিচালিত
অটোরিকশা ও মিশুকের কোনো বৈধতা নেই। এসব যানবাহনের চালকদের কোনো প্রশিক্ষণ বা লাইসেন্স না থাকায় নিয়মিত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। শহর থেকে গ্রামের দূরত্ব কমলেও অনিয়ন্ত্রিত গতি, ঝুঁকি ও যত্রতত্র স্ট্যান্ডের কারণে যানগুলো এখন বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। অটোরিকশা ও মিশুক চলাচলে একটি নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারলে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
কুড়িগ্রাম সদর ট্রাফিক ইনচার্জ এ কে এম বানিউল আনাম বলেন, শহরকে যানজট মুক্ত রাখতে ট্রাফিক বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও অটোস্ট্যান্ডগুলোকে স্থানান্তরের জন্য আমরা পরিকল্পনা করছি।
ইএইচ