অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সিলেট ব্যুরো প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০২:৪০ পিএম
অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের মুখে কয়েকজন অধ্যক্ষ পদত্যাগও করেছেন। কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ব্লুবার্ড স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুসনে আরা বেগমের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা অধ্যক্ষকে রুমের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখেন। ক্ষোভের মুখে দুপুর ১২টার দিকে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ হুসনে আরা বেগম ও শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল আওয়ামী লীগপন্থি। দীর্ঘদিন ধরে তারা নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে আছেন। দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তন হওয়ায় তারা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু অধ্যক্ষ তাতে কর্ণপাত করছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে তারা কঠোর হতে হয়েছে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্লুবার্ড স্কুল এন্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল ক্যাম্পাস থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী মারমুখী হলে অন্যরা তাকে রিকশায় তুলে দেন।

অপরদিকে, গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরশাদ আলিও রোববার পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১ আগস্ট ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরশাদ আলী কলেজে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সভা করেন। তিনি ফেসবুকে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েও পোস্ট করেন। এসব কারণে তারা এরশাদ আলির পদত্যাগ দাবি করেন। আন্দোলনের মুখে তিনি রোববার পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে কলেজ ত্যাগ করেন।

এরশাদ আলী ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছিলেন।

পদত্যাগের বিষয় নিশ্চিত করেছেন কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ‘আমরা সব শিক্ষক অধ্যক্ষকে সভা করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের কারো কথা না শুনে উনার খেয়াল খুশিমতো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই সভা করেছিলেন।’

অপরদিকে, রোববার সিলেট নগরীর কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভকারী ছাত্রীরা জানান, প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষ বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করতেন। তার অশালীন আচরণে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। পরে এলাকাবাসী সালিশ করে তাকে জরিমানা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই জরিমানার টাকা না দিয়ে স্কুলের তহবিল থেকে পরিশোধ করেন।

ছাত্রীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক নিয়মবহির্ভূতভাবে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন দিয়ে তার অনুগত সভাপতি নির্বাচিত করেন। পরে সভাপতির স্বাক্ষর নিয়ে ভাউচার বাণিজ্য শুরু করেন। এতে বিদ্যালয়টির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক।

ইএইচ