পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাকে আওয়ামী লীগের অন্যতম সুবিধাভোগী, দুর্নীতিবাজ,সাম্প্রদায়িক ও উপজাতীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক দাবি করে তার অপসারণের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন। দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক এর পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফেরদৌসী বেগম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট করিম উল্লাহ ও আনিসুল ইসলাম অনিক।
স্মারকলিপি অভিযোগ করা হয়, পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন দোসরকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্থান না দেয়ার দাবি থাকলেও সুপ্রদীপ চাকমা অজ্ঞাত কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে ঠাঁই পেয়েছেন। সুপ্রদীপ চাকমা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, আস্থাভাজন ও তার আমলে অন্যতম সুবিধাভোগী ছিলেন। সুপ্রদীপ চাকমা পলাতক শেখ হাসিনার এতোটাই বিশ্বস্ত ও অনুগত ছিলেন, যার ফলে ২০০৯ সাল থেকে টানা প্রায় ১৬ বছর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন।ভিয়েতনাম ও টার্কি এম্বাসিতে দায়িত্ব পালনকালে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা হয়। যা এখনও দুদকে চলমান রয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ার কারণে সুপ্রদীপ চাকমাকে ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই সচিব মর্যাদায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। সে পদে থাকা অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা করা হয়।
সুপ্রদীপ চাকমা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন ও আওয়ামী মতাদর্শের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠনের অন্যতম পৃষ্টপোষক। সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে পার্বত্য এলাকায় শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের ও পাহাড়ের উপজাতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতাদের নিয়ে নানা বৈষম্যমূলক এবং ষড়যন্ত্রমূলক কাজ শুরু করেছেন। সুপ্রদীপ চাকমা শান্তির পাহাড়ে শান্তির পাহাড়ে শুরু করেছে শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্টের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড। সুপ্রদীপ চাকমা পাহাড়ে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালি নাগরিকদের মাঝে বিভেদ ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে ইতিমধ্যে শান্তিপ্রিয় সাধারণ নাগরিকগণ, ছাত্র-জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সুপ্রদীপ চাকমা গত ২৩ আগস্ট খাগড়াছড়িতে বন্যায় দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আসলেও সুশীল সমাজের নামে আওয়ামী লীগ ঘরানা এবং উপজাতীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতাদের সাথে পার্বত্য জেলায় একাধিক বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সুশীল সমাবেশে সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় বাস্তবে সুশীল সমাজের আড়ালে ঐ মতবিনিময় সভাটি ছিল “আওয়ামী লীগ”ঘরানার নেতাদের নিয়ে। যারা আওয়ামী লীগের আমলে সুবিধাভোগী। বৈঠকে বাঙালি সুশীল নেতৃবৃন্দকে ডাকা হয়নি।
সুপ্রদীপ চাকমা বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১৯৮৫ ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। চাকরিকালে তিনি মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি রাবাত, ব্রাসেল আঙ্কারা ও কলম্বোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরএস