রৌমারীর লাল শাপলা বিল প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৫:৫৬ পিএম
রৌমারীর লাল শাপলা বিল প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত

বিলের পানিতে ভাসছে লাল ও সাদা শাপলা। এ যেন নতুন রঙে সেজেছে প্রকৃতি। এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমিরা।

কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদ মাদারটিলা বিল এবং দেওকুড়া বিল। পাঁচ বছর যাবৎ বিল দু’টি লাল শাপলার বিল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

সাদা আর লাল শাপলার অপার সৌন্দর্যের আকর্ষণে দূর দূরান্ত থেকে পর্যটক আসায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে অনেকের।

শুক্রবার সকালে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন ভিড় করছেন শাপলা বিল এলাকায়। পরিবার পরিজন, স্কুল শিক্ষার্থী বা প্রিয় মানুষদের নিয়ে অনেকে নৌকাযোগে ঘুরে দেখছেন লাল আর সাদা শাপলার রাজ্য। ছবিও তুলছেন সবাই। কেউবা আবার পানিতে নেমে শাপলা ফুল ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।

বিল ঘিরে কর্মস্থানও হয়েছে অনেকের। পর্যটকদের বিল ঘুরিয়ে আয় করছেন নৌকার মাঝিরা আবার হরেক রকমের দোকান বসিয়ে দোকানের আয় দিয়েও সংসার চালাচ্ছেন দোকানিরা।

তবে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। চার পাশের জমির ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে পর্যটকরা। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, সরকারিভাবে কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় এনে বিল দু’টি সংরক্ষণ করা উচিত।

পরিবারের সদস্যের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন টাপুর চরের শামীম, রৌমারীর সেতু। তারা জানান, ‘শাপলা ফুল মধ্যরাত থেকে সকার ১০টা পর্যন্ত ফুটে থাকে, তাই সকাল সকাল ঘুরতে এসেছি এই বিলে। লাল আর সাদা রঙ এর শাপলায় এলাকার প্রকৃতি অপরূপ সৌন্দর্যে সেজেছে। যা দেখে অনেক ভালো লাগছে।’

নৌকার মাঝি ফরহাদ আলী বলেন, ‘শুক্রবার নৌকায় দর্শনার্থী পারাপার করে তার আয় হয়েছে ১৮শত টাকা। তার ভাষ্য, এদিন ১৬টি নৌকার মাঝির মোট আয় হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। শুক্র ও শনিবার লোকজনের ভিড় বেশি হয় বলেও জানান তিনি।’

ওই এলাকার শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমাদের এলাকাটা এখন লাল শাপলার বিল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এলাকাটি যেন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় এবং কৃষকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। কারণ পর্যটকদের কারণে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। দুই ফসলের জায়গায় এক ফসল পায় কৃষকরা।’

সরকারের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য বসার জায়গাসহ দেখভালের ব্যবস্থা করলে দিন দিন এলাকাটি অনেক উন্নত হবে। দূরদূরান্ত থেকে পর্যটক আসবে। এতে এলাকার মানুষের আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘সরকারের প্রতি আবেদন আমাদের এই এলাকাটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জোড় দাবি জানাচ্ছি।’

আগামীতে যাতে ওই এলাকায় বেশি সংখ্যক পর্যটক আসেন সে ব্যবস্থাই করা হবে বলে জানান রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান।

ইএইচ