নিক্সন চৌধুরীসহ ১১০ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার

ফরিদপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
নিক্সন চৌধুরীসহ ১১০ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার

ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহাদাৎ হোসেন (বরখাস্ত)সহ ১১০ জন ও অজ্ঞাত আরও ৬০ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামান ওরফে তাসকিন রাজু।

মঙ্গলবার(৩ সেপ্টেম্বর)সকালে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. মামুন আল ইসলাম। তিনি বলেন সোমবার(২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার আগে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রুজু করা হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসামি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী ও ২ নম্বর আসামি মো. শাহাদাৎ হোসেনদ্বয়ের নির্দেশে অন্যান্য আসামিগণ ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষের জীবন নাশের হুমকি-ধমকিসহ নিরীহ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতো। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে আসামিগণ তাহার পরিবারের সদস্যদেরকে হুমকি দেওয়াসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতো।

এছাড়াও ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করিয়া ১ নম্বর আসামি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী ও শাহাদাৎ হোসেনদ্বয়ের হুমকি অন্যান্য আসামীরা সহ অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাণে মেরে ফেলার ও গুম করার ভয়-ভীতি দেখায়।

অভিযোগে বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৩/০৮/২০২৪ তারিখে আনুমানিক বেলা ১২ টার দিকে আমি সহ বিভিন্ন স্কুল এবং সরকারি কেএম কলেজের শিক্ষার্থীরা নিয়ে ভাঙ্গা পৌর সভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৈডুবি সদরদী গ্রামের রেলসংলগ্ন ক্রসিংয়ের পাকা রাস্তার উপরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে উল্লিখিত আসামীরা সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জন একত্রে সংঘবদ্ধ হয়ে ধারালো অস্র-সশ্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের আন্দোলনকে বাধা দেয়। এসময় কয়েকজন আসামি তাদেও হাতে থাকা পিস্তল ও শর্টগান উঁচু করিয়া বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিহত করে। কিন্তু, এতে আমাদের আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অসম্মতি জানালে, আসামি শাহাদাৎ হোসেনর হুকুমে আসামীরা কয়েকজন পিস্তল ও শর্টগান দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে, আমরা প্রাণে বাঁচতে ঘটনাস্থল থেকে যার যার দৌড়ে পালাই। এসময় আসামীরা কয়েকজন আমাদের উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে আন্দোলন করলে তোদের ঘরে ঘরে যাইয়া গুলি করিয়া খুন করবো। আসামিগণ অত্যন্ত দাঙ্গাবাজ ও নির্যাতনকারী প্রকৃতির লোক হওয়ায় আমি ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে আন্দোলন করার সাহস পাইনি। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়সহ বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা জানে এবং প্রমাণ করিবে।

মামলার বাদি মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে তাসকিন রাজু জানান, থানায় এজাহার দেওয়ার পর আসামীরা বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এ অভিযোগকে কেন্দ্র করে একটি কু-চক্র মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ও অন্যতম আসামি (স্বতন্ত্র) ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরি সহ তার সহযোগীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত বিচারের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী ও ফরিদপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন পলাতক থাকায় ও মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকায় তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর সার্কেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) এর দায়িত্বে মো. সালাহ্ উদ্দিন জানান, খুব শীঘ্রই তদন্তকার্য শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিআরইউ