হাসপাতালে ধর্ষণের চেষ্টা, গণধোলাই খেলেন ছাত্রলীগ নেতা

আমার সংবাদ ডেস্ক: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪, ০২:৪১ পিএম
হাসপাতালে ধর্ষণের চেষ্টা, গণধোলাই খেলেন ছাত্রলীগ নেতা

নোয়াখালীতে জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের ইসিজি রুমের টেকনেশিয়ান নারীকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ছাত্রলীগ নেতা আজহার উদ্দিন রাব্বি। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই নারী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত রাব্বিকে গণধোলাই দেন। একপর্যায়ে সদরের সুধারাম থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেন।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে ইসিজি টেকনেশিয়ান হিসেবে কাজ করে আসছেন তিনি। ঘটনার সন্ধ্যায় রাব্বি তার এক বন্ধুকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে রাব্বি নিজেকে হাসপাতালের সাবেক মার্কেটিং বিভাগের লোক বলে পরিচয় দেন। সে হিসেবে রাব্বির সাথে কিছু সম্মানের সাথে কথা বলেন তিনি। কিন্তু ইসিজি রুমে যখন কোন লোকজন ছিল না, তখন রাব্বিকে বের হয়ে যেতে বলেন ভুক্তভোগী। কিন্তু রাব্বি বের না হয়ে একটা সময় তার উপর হামলে পড়েন। নিজেকে বাঁচাতে নানা চেষ্টার এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি।

ততক্ষণে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মচারীরা বিষয়টি টের পান। ঘটনা বাড়িতে জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন অভিযুক্ত রাব্বিকে গণধোলাই দেন। এক পর্যায়ে সুধারাম থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

এবিষয়ে সুধারাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাব্বিকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করেন। তবে ভুক্তভোগী ওই নারী প্রথমে মামলা করবেন বললেও পরে আর মামলা করেননি। থানার মাধ্যমে সমঝোতা করেছেন। ফলে মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্ত রাব্বিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের পরিচালক শামীম এ বিষয়ে বলেন, আমরা বিষয়টি জানার ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ভুক্তভোগী নিজের পরবর্তী নিরাপত্তার কথা ভেবে মামলা করেননি। বিষয়টি থানার ওসির মাধ্যমে সমাধান করেছেন।

কোন কোন আইনি ব্যবস্থা নেননি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমার বাবা, ভাই কেউ নেই যে আমাকে সহযোগিতা করবে। এ চাকরিটি দিয়ে আমার পরিবার চলে। মামলা করতে গিয়ে যদি ঝামেলায় পড়ি বা পরবর্তীতে আরও ঝামেলা নেমে আসে, তাই থানার মাধ্যমে সমঝোতা করেছেন। এ ঘটনায় মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানান ভুক্তভোগী।

জানা যায়, অভিযুক্ত আযহার উদ্দিন রাব্বি সুবর্ণচর উপজেলার ৫ নং চর জুবলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ সভাপতি। রাব্বির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপকর্মের একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে এক ডাক্তার দম্পতির বাসায় চুরির মামলায় ২ মাসের বেশি সময় কারাভোগ করেন এ ছাত্রলীগ নেতা। কারাগার থেকে বেরিয়ে সুবর্ণচর ছেড়ে জেলা শহর মাইজদীতে উঠেন রাব্বি। মাইজদী এসে স্থানীয় পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেলের আশ্রয়-পশ্রয়ে আবারও অপরাধে বেপরোয়া হয়ে উঠেন এই ছাত্রলীগ নেতা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আযহার উদ্দিন রাব্বি বলেন, তাকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ওই নারী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনটি করে। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ছাড়া পান তিনি।

বিআরইউ