কাউনিয়ায় পল্লী বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহকরা, এক মাসের ব্যবধানে তিন থেকে চারগুণ বেশি বিল হওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা বলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় ব্যক্তির অবহেলা ও দুর্নীতি অনিয়মের কারণেই এমনটি হচ্ছে। অতিরিক্ত নয়, ব্যবহার বাড়ায় বিল বেশি হচ্ছে বলে দাবি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের।
বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক হাসিনা বেগম জানান, প্রতিমাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসতো ১২ থেকে ১৬শত টাকা, কিন্তু হঠাৎ আগস্ট মাসে এক লাফিয়ে বিদ্যুৎ বিলের কাগজে ধরা হয়েছে ৩৪০০ টাকা। এই ভূতুড়ে বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’
উপজেলার টেপামধুপুরে ইউনিয়নের বুড়িরহাট এলাকার আব্দুল বাতেন জানান, তিনি প্রতিমাসে তার বাড়িতে গড়ে ১৫-২০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলেও বিলের কাগজে দেওয়া হয় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা করে। পূর্বচাঁনঘাট গ্রামের আবুল কাশেম এর ছেলে বলেন আগের মাসগুলোতে মিটারে বিল আসতো ৬-শ থেকে ৯-শ টাকা কিন্তু এ মাসে বিল আসছে ৩ হাজার ৬শ টাকা।
একই গ্রামের দিনমজুর শ্রীকান্ত সরকার জানান, তার বাড়িতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের খরচ হিসাবে প্রতিমাসে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বিদ্যুৎ বিল হলেও গত আগস্ট মাসে তার বিদ্যুৎ বিল ধরা হয়েছে এক হাজার টাকা।
শহীদবাগ ইউনিয়নের আমজাদ হোসেন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন,‘আমরা অসহায় মানুষ, এতো বেশি বিল আমরা এখন কীভাবে পরিশোধ করবো, বিল না দিলে পরের মাসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারা। এই ভূতুড়ে বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’
হরিশ্বর গ্রামের দিনমজুর আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ একসঙ্গে এমন ভূতুড়ে বিল আসায় খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি দিন আনি দিন খায়, অভাবের সংসারে তাত মাসে ৩০০ টাকা দিতে হিমশিম খায় আর এখন ১০০০ টাকা কীভাবে দিবো। অফিসের লোকজন ইচ্ছেমতো বিল করছে, যার প্রভাব পড়ছে আমাদের উপর।
জানাগেছে, কাউনিয়া পল্লী বিদ্যুৎ এর আওতায় উপজেলায় মোট ৪৪ হাজার ৬শ` ৭৯জন গ্রাহক রয়েছেন।
অভিযোগ আছে, অফিসে বসেই বিদ্যুৎ বিল তৈরি করছেন মিটার রিডাররা। একমাসের বিদ্যুৎবিল বকেয়া হলে গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নতুন করে সংযোগ নিতে গ্রাহককে গুণতে হচ্ছে বাড়তি সাড়ে ৮০০ টাকা। পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে এবিষয়ে জানতে গেলে কর্মকর্তারা বলছেন, যে আগের মাসে বিল কম ধরা হয়েছে তাই এ মাসে বেশি বিল এসেছে মিটারের রিডিং দেখে বিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউনিয়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. জোবায়ের আলী বসুনিয়া জানান, গ্রাহকের মিটারের ব্যবহৃত রিডিং অনুযায়ী বিল করা হয়েছে। অস্বাভাবিক বিল এসে থাকলে মিটারে সমস্যা থাকতে পারে। এমন অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল হলে ভুক্তভোগী গ্রাহককে অফিসে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। মিটার পরীক্ষাসহ মিটারের আগের ও পরের ব্যবহৃত ইউনিট দেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিআরইউ