ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়মে ডুবছে নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

দোহার নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়মে ডুবছে নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

ঢাকার নবাবগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য পদত্যাগ করা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ডুবতে বসেছে বিদ্যালয়টি।

এমন অভিযোগ বিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষকসহ অভিভাবকদের।

তাদের দাবি, আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে গঠিত কমিটি যেন সঠিকভাবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এদিকে সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের বিষয়ে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানায়, আব্দুল মান্নান সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ২০২০ সালের ২০ আগস্ট তৎকালীন নবাবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদটি বাগিয়ে নেন। এরপর শুরু করেন দুর্নীতি এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড। তার অনৈতিক কর্মকান্ড এতটাই প্রসার লাভ করে যে তার বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক কর্মচারী কথা বলতে সাহস পেত না। ওই সময়ের  ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উপজেলা পর্যায়ের একাধিক নেতাকর্মী ও উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের যোগসাজশে সকল অপকর্মই তার বৈধ হয়ে যেত।

আব্দুল মান্নান নবাবগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যালয়ে পুরাতন ভবন কোন রকমের টেন্ডার ছাড়াই নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি বালু দিয়ে ভরাট করলেও তার কোন লিখিত হিসাব নেই তার কাছে। বিদ্যালয়ের জমিতে হওয়া একাধিক কাঠ গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। খরচের খাতায় তার হিসাব নেই।  

অপরদিকে  তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যালয়ের  বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অফিস সহকারী ও পিয়নের  ২৪ মাসের বেতন ভাতা বন্ধ করে রাখেন। তার কারণে এসব শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করে।

এছাড়াও বিদ্যালয়টি সরকারি করার ঘোষণা দেওয়া হলে তিনি  সরকারি আইন না মেনে ১৯ জনকে অব্যাহতি দেন। তারপর একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন করে খণ্ডকালীন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেন অর্থের বিনিময়ে। তিনি প্রতিবছরই প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিতেন। কিন্তু এ বিষয়  দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দেখেও  না দেখার ভান করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছ থেকে বেতন সেশন নিলেও খাত উল্লেখ না করে রশিদ দেয়। তাদের এ রকম অনেক ছাত্রের সাথেই করেছে। এতা দিন ভয়ে কথা বলিনি।

এ বিষয়ে ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক তার অনিয়মের অভিযোগ তদন্তেরর জন্য চিঠি ইস্যু করে। পরবর্তীতে সেটাও আলোর মুখ দেখেনি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, তার দুর্নীতির বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, তিনি কোনো অনিয়ম করেননি। এসব ষড়যন্ত্র। বিল ভাউচারে স্বাক্ষর না করে টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেনি। তবে শিক্ষার্থীদের কাছে এসব অনিয়ম দুর্নীতির কথা স্বীকার করে লিখিত দিয়েছে।

ইএইচ