বিঘাপ্রতি লোকসান ৭ হাজার টাকা

চৌগাছায় পাটের ফলন-দাম কম হওয়ায় বিপাকে কৃষকরা

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
চৌগাছায় পাটের ফলন-দাম কম হওয়ায় বিপাকে কৃষকরা

পাটের ফলন ও দাম কম হওয়ায় বিপাকে যশোরের চৌগাছা উপজেলার কৃষকরা। সোনালি আঁশ খ্যাত পাট চাষে বিঘাপ্রতি প্রায় ৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকের। সোনালি আশ কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে। দাম কমে যাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা।

এ বছর অতিমাত্রায় খরাসহ নানা কারণে পাটের ফলনে বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে বাজারেও কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এমতাবস্থায় পাটের সরকারি মূল্য নির্ধারণে দাবি এ অঞ্চলের পাট চাষিদের।

উপজেলার ফুলসারা, সিংহঝুলী, পাশাপোল, ধুলিয়ানী, চৌগাছা সদর, পাতিবিলা, জগদিশপুর, হাকিমপুর, নারায়নপুর, স্বরুপদাহ, সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, পাট জাগ দেওয়া, পাটকাঠি থেকে আঁশ ছাড়ানো ও শুকানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাট চাষিরা।

গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দেড়শ হেক্টর কম জমিতে পাট চাষ হয়েছে। তারপরও অতিমাত্রায় খরা ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলনেও বিপর্যয় ঘটেছে। পাটের বীজ বপন থেকে শুরু করে বিক্রয় পর্যন্ত প্রস্তুত করতে অন্যান্য বছরের তুলনায় খরচও এবার বেশি হয়েছে। তাতে করে বর্তমান বাজারদরে পাট বিক্রি করে বিঘাপ্রতি প্রায় ৭ হাজার টাকা লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর তোষা জিআরও ৫২৪ ও রবি ৮ জাতের পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৮শ ২০ হেক্টর। সেখানে চাষ হয়েছে ১৭শ ৫ হেক্টর জমিতে। প্রতি বিঘা জমিতে পাটের ফলন হয়েছে আট থেকে ১০ মণ।

প্রকারভেদে বাজারে পাট প্রতি মণ দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খরচের তুলনায় বাজারে পাটের দাম কম হওয়ায় লোকসানের কারণে পাট চাষে অনীহা প্রকাশ করছে কৃষকরা। এমতাবস্থায় পাটের সরকারি ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে দাবি চাষিদের।

উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, বর্তমানে পাট চাষে করে আমরা লোকসানের মধ্যে পড়েছি। এক বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫ থেকে ২৮ হাজার টাকা। কিন্তু পাটের ফলন নেই। আর ফলন না হওয়ায় প্রতি বিঘায় ১০ মণের বেশি হচ্ছে না। এদিকে বাজারে পাটের দাম কম হওয়ায় তাদের বিঘা প্রতি প্রায় ৭ হাজার লোকসান হচ্ছে।

পাট ব্যবসায়ী আলী হোসেন জানান, প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমানো ও পাটজাত পণ্যে ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশে পাট রপ্তানিতে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। চৌগাছা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসাইন বলেন, পাট চাষে খরচ কমাতে ও ফলন বৃদ্ধিতে কৃষি বিভাগ কারিগরি বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে। সরকারিভাবে পাট ক্রয় শুরু হলে কৃষক তাদের ক্ষতি পুশিয়ে নিতে পারবেন।

বিআরইউ