মাটিরাঙ্গায় শান্তি সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম
মাটিরাঙ্গায় শান্তি সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে মামুন হত্যার প্রতিবাদে দীঘিনালা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে লারমা স্কয়ারে আসলে উপজাতিদের সাথে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। পরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্র ধরে খাগড়াছড়ি রাঙামাটি জেলায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়েছিল। পাহাড়ের শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাহাড়ে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়কে নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গায় সর্বস্তরের জনসাধারণ এর উদ্যােগে  শান্তি সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাটিরাঙ্গা চৌধুরী কমিউনিটি সেন্টারে মাটিরাঙ্গা সর্বস্তরের জনসাধারণ এর উদ্যােগে শান্তি সম্প্রীতি সমাবেশে  মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো.মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান।

এসময় খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মো.আরেফিন জুয়েল, সাবেক মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র আবু ইউসুফ চৌধুরী, সাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মনিন্দ্র কিশোর এিপুরা, সাবেক মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নাছির আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.তাজুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন।

স্বাগতবক্তব্য রাখেন, মানবাধিকার কর্মী  শাহেনা আক্তার। মাটিরাঙ্গা উপজেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নাগরিক ও নিরাপত্তা কমিটির আহ্বায়ক মো. নুরুল আলম, মাটিরাঙ্গা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফেজ মো.হারুন উর রশীদ, মাটিরাঙ্গা বেসরকারি মাধ্যমিক  শিক্ষক সমিতির  প্রতিনিধি মাটিরাঙ্গা আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী মো.সলিমউল্লাহ, বৈষম্য বিরোধী ছাএ আন্দোলনের নেতা মীর ফয়েজুল্ল্যাহ, মাটিরাঙ্গা উপজেলা হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশন এর পক্ষে হেডম্যান জয়া চাকমান, কারবারি অ্যাসোসিয়েশন এর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মন বিকাশ এিপুরা, মাটিরাঙ্গা কেন্দ্রীয় কালি মন্দির এর পুরোহিত  শ্রী মৃধল চত্রুবর্তী,  মারমা যুব এক্য নেতা অংচা মারমা, চাকমা প্রতিনিধি কল্যাণ মিএ চাকমা, অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন।

সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তারা সাম্প্রতিক ঘটনাকে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি উল্লেখ করে বলেন, একটি অবশেষে মহল শান্ত পাহাড়কে অশান্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে। তাদেরকে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানান বক্তারা।

এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজি,সন্ত্রাস বন্ধে অভিযান পরিচালনার  দাবি জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল শান্তি স্থাপনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেকোনো অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সচেষ্ট আছে। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকারও আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান বলেন, পাহাড়ে সকল বিভেদ ভুলে নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখার উপর জোর দিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেছেন, কারো উসকানিতে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবেনা। নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করতে হবে। বিশেষ কোন গোষ্ঠীকে পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরির সুযোগ দেয়া যাবেনা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, স্যোশাল মিডিয়ার গুজবে গা ভাসিয়ে না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, পাহাড়ের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা যাবে না।

বিআরইউ