রামপালে তীব্র নদীভাঙন, ঝুঁকিতে অর্ধশতাধিক পরিবার

রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
রামপালে তীব্র নদীভাঙন, ঝুঁকিতে অর্ধশতাধিক পরিবার

ঘরের মেঝেতে পানি থইথই করছে। এখনো কিছুই খাইনেই। তিন চারদিন হবে ঘুমোতে পারিনি। কিডা আমাদের খোঁজ নেবে। কনে যাবো কি করবো কিচ্ছুই বুঝতেছি না। তুমি তো আমাদের সাংবাদিক দেহে ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছেড়ে দাও, দেহি কিছু হয় কী না।

এমন আক্ষেপ ও হতাশা নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নদী ভাঙনে গৃহহীন বিরাজ মন্ডল ও গীতা মন্ডল।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। তীব্র আকারে নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সেখানকার বসতঘরসহ নানা স্থাপনা।

অব্যাহত ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। মূলত রামপাল মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল অপরিকল্পিত খননের ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকারে ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার রোমজাইপুর এলাকায় তীব্র নদী ভাঙনে শতাধিক পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

ভাঙনে ৮টি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ২০টি পরিবার। নদীর ভাঙনে ২ কিলোমিটার আধাপাকা রাস্তা ভেঙে গেছে। অতি জোয়ারের তীব্র স্রোতে ভেঙে যায় গ্রামের প্রায় ৫০ মিটার গ্রাম রক্ষা বাঁধ। এতে চারটি বাড়ি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ঝুঁকিতে রয়েছে নদীসংলগ্ন আরো প্রায় ২০টি বাড়ি। যেকোনো সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে এসব বাড়িঘর।

এছাড়াও রামপাল সদরের কৃষি অফিস থেকে শুরু করে বগুড়াব্রী পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার আধাপাকা রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।  ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি পরিবার হয়েছে বাস্তুচ্যুত। এছাড়াও কৃষি জমি, গাছপালা ও আয়ের একমাত্র মৎস্য ঘেরসহ নানান স্থাপনা ভেসে গেছে।

ভাঙনরোধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির নেটওয়ার্ক সদস্য এম. এ সবুর রানা বলেন, তীব্র নদীভাঙন মোকাবিলায় টেকসই বেড়িবাঁধ ও জিও ব্যাগ দিয়ে প্রাথমিক এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। তবে স্থায়ী সমাধানে নদীর বেশকিছু বাক রয়েছে যেগুলো অতি দ্রুত সোজা করে কেটে বা অবমুক্ত করলে এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন।

নদীভাঙনে করণীয় বিষয়ে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল- বিরুনী বলেন, রামপাল মোংলায় আমাদের বেড়িবাঁধ নেই। শরণখোলা মোড়লগঞ্জ আছে। যেখানে আমাদের বেড়িবাঁধ নেই সেখানে কাজ করার এখতিয়ারও আমাদের নেই। তাছাড়া ওখানে একজায়গায় কাজ করলে হবে না। বেশ কয়েক জাগায় কাজ করতে হবে। যার খরচ খুবই বেশি। আমি বিষয়টি ইতিমধ্যে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। হয়তো তারা সরেজমিনে আসতে পারে। হুট করে আসলে তো কিছু হয় না।

ইএইচ