অসদাচরণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ

কুষ্টিয়ায় দুই শিক্ষককে শাস্তি, পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৭:১৮ পিএম
কুষ্টিয়ায় দুই শিক্ষককে শাস্তি, পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন

যৌন হয়রানি ও নৈতিক স্খলনসহ নানা অনিয়ম অভিযোগে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক শহাজালাল ও কলেজে শাখার হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কামরুজ্জামান সম্রাটকে পাঠদানে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া এসপিকে দেওয়া লিখিত অভিযোগের ১০ দফা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার এসপি ও পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি  মো. মিজানুর রহমান বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অভিযোগে জানা যায়, অনিয়ম-দুর্নীতিসহ কলেজের কতিপয় শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানি চালিয়ে আসছে। এর আগে অধ্যক্ষকে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পায়নি শিক্ষার্থীরা।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা ১০ দফা লিখিত দাবিনামা দিয়েছে এসপিকে। এতে সহকারী প্রধান শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহজালাল ও প্রভাষক কামরুজ্জামান সম্রাটকে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের দাবি করা হয়েছে। এ

ছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের উপর কুদৃষ্টি ও অশ্লীলভাবে কথা বলার দায়ে শিক্ষক শরিফুল, তৌহিদুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম ও ল্যাব সহকারী জসীম উদ্দিনের শাস্তি দাবি করা হয়।

এর আগে, বাংলা বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসাদ স্কুলের অনিয়মসহ নানা অভিযোগে তার ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে গত মঙ্গলবার দুপুরে অনন্ত এক/দেড়শ প্রাক্তন ছাত্র উন্মুক্ত কলেজের মঞ্চে জমায়েত হন। এরপর স্কুলে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী ক্লাসরুম ছেড়ে উন্মুক্ত চত্বরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

পরবর্তীতে স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল আরেফিনসহ প্রাক্তন ও নিয়মিত ছাত্রদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের অফিস কক্ষে প্রায় বৈঠক করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ওই প্রতিনিধি দলের দাবির প্রেক্ষিতে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তারেক জুবায়েরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে। এদিকে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহজালাল ও প্রভাষক কামরুজ্জামান সম্রাটকে পাঠদানে বিরত থাকতে নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।

কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল আরেফিন জানান, অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত দুই শিক্ষককে পাঠদানে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এসপি।

ইএইচ