রাজবাড়ীতে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৩

রাজবাড়ী প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪, ০২:১১ পিএম
রাজবাড়ীতে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৩

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। এসময় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বালিয়াকান্দি চৌরঙ্গী মোড়ে দু’গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ৭জন বালিয়াকান্দি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বালিয়াকান্দি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আজম চুন্নু, ইলিশকোল গ্রামের কালাম শেখের ছেলে আলম শেখ, একই গ্রামের হাসেম ভুঁইয়ার ছেলে জাহিদুল ভুঁইয়া, বালিয়াকান্দি গ্রামের মৃত ইদ্রিস মোল্যার ছেলে রুবেল মোল্যা, সাঈদ শিকদারের ছেলে আরিফ শিকদার, আমতলার কালু মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া, পথচারী বালিয়াকান্দি গ্রামের বাদশা মোল্যার ছেলে ফিটু মোল্যা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ভুঁইয়াকে শুক্রবার বিকেলে বালিয়াকান্দি চৌরঙ্গী মোড়ে হঠাৎ করেই সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আজম চুন্নুর ছেলের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মিলে লাঞ্ছিত করে। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বালিয়াকান্দি শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে দু’গ্রুপ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।

এ সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে রাজবাড়ী জেলা শহরের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্থাপিত আর্মি ক্যাম্প হতে ক্যাপ্টেন মো. এনামুল হাসানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ও বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ সময় যৌথ বাহিনী এ ঘটনায় জড়িত উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মশিউল আলম চুন্নু (৫৫), উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল, রুবেল সহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত ৩জন থানা হেফাজতে রয়েছে।

যৌথ বাহিনী সূত্র জানায়, মশিউল আলম চুন্নু সংঘর্ষে আহত হয়ে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে গেলে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি হতে বলে। কিন্তু সে গ্রেপ্তার এড়াতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে নিজ বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে যৌথ বাহিনী তাকে সহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় সে নিজেকে ভিন্ন নামে পরিচয় দেয়। কিন্তু যৌথ বাহিনী তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। সংঘর্ষের ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনী টহল ও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম শওকত সিরাজ বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর চুন্নুর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মারধর সহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করে আসছিল। আমরা তার অপকর্মের প্রতিবাদ করার কারণে শুক্রবার বিকেলে বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ভুঁইয়াকে লাঞ্ছিত করে। পরে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টার ঘটনা ঘটে। রাতে আমার বাসভবনে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন বলেন, সংঘর্ষেও খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপি নেতা মসিউল আযম চুন্নুসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে থানায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ভুঁইয়া বাদী হয়ে ১৫জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদেরকে শনিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  

বিআরইউ