মহাসড়কের সরকারি রাস্তা দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ

মাগুরা প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
মহাসড়কের সরকারি রাস্তা দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ

মাগুরা সদরের আলমখালী মহা-সড়কের সরকারি রাস্তা দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সদর থানা পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাগুরা সদর থানা অধীন ১০৫ সাচানীরাউতারা মৌজার সিএস খতিয়ান ৩৯,এসএ খতিয়ান ২৪,দাগ নং ১৬০৮ এর ১১শতক জমি নিয়ে বিরোধ। সিএস রেকর্ডটিও মালিক, রায়তি দং অভয়চরন মন্ডল, এসএ রেকর্ডটিও মালিক  দং মকবুল বিশ্বাস,এবং আরএস রেকর্ড রয়েছে মাগুরা সড়ক ও জনপথ এর নামে।

ঝিনেদাহ-মাগুরা মহাসড়ক সংলগ্ন ১২ রুম বিশিষ্ট মার্কেট দখল সূত্রে মালিক রয়েছে ৫নং হাজরাপুর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, সিরাজুল মন্ডল, বাঁশি সিকদার, আসাদুজ্জামান, এবং শান্তি রাম। মহাসড়কের পাশে নির্মিত এই মার্কেটটি গত ৫ তারিখে ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। মার্কেটটি নতুন করে নির্মাণ করতে গেলে সংঘর্ষে জড়িয়ে যায় স্থানীয়রা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সদর থানার এসআই ইব্রাহিম উভয়পক্ষকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

৫নং হাজরাপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, সাচানী রাউতারা মৌজার সাবেক ১৬০৮ দাগ, হালদাগ-২৭৩৪ নং মাগুরা - ঝিনেদাহ মহাসড়কের, অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমি। ১৯৩৯ সালে দি ক্যালকাতা গ্যাজেটের মাধ্যমে মহা- সড়কের জমি অধিগ্রহণ করে। উক্ত অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমির পরের দাগ ১৬০৯ আমার জমি। আওয়ামী সরকারের শাসনামলে কোর্টের আইনকে নিজের মতো সাজিয়ে জোর করে বারোটি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া বাণিজ্য চালাচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যক্তিরা। মানুষের সুবিধার জন্যই রাস্তা নির্মাণ করে সরকার। ভবিষ্যতে পাকা রাস্তা প্রশস্ত করলে এই ভবন অনেক বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব রাস্তার উপর থাকা ভবনের অংশ বিশেষ অপসারণের দাবি জানান তিনি।

এদিকে ৫টি রুমের মালিক মো. আসাদুর জামান বলেন, ১৯২৪ সালের সিএস রেকর্ডটিও মালিক অভয়রচরন, বানীকান্ত এবং (৬২সালের রেকর্ডী)১১ শতাংশ জমি অভয়রচরনের উত্তরসূরি মতিলাল এর নামে। আরএস রেকর্ড মাগুরা সড়ক ও জনপদ এর নামে হওয়ায় । মতিলালের ছেলে জয়গোপাল মাগুরা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল আদালতে নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ)এলএসটি মামলা করে। নিম্ন আদালত জয়গোপাল এর পক্ষে রায় দিলে,সড়ক ও জনপথ অফিস উচ্চ আদালতে আপিল করেন,এবং সে আপিলে সড়ক ও জনপদ অফিস হেরে যান। আমরা কোর্টের রায়ের মাধ্যমে মালিক হয়েছি।

সড়ক ও জনপথ সার্ভেয়ার ইলিয়াস বলেন,১৯/৬/১৩ ডিগ্রি রদ বাবদ দেওয়ানী ১৮৮/১৩ মাগুরা সদর সহকারী জজ আদালতে নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) বাদি হয়ে মামলা রুজু করেন। এরপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বাবদ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বাদি হয়ে বিবাদী জয় গোপাল মণ্ডলের বিরুদ্ধে দেওয়ানী ০৪/২০১৩ মাগুরা সদর সহকারী জজ আদালতে আরেকটি মামলা রুজু করেন। মামলা ২টি চলমান রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে ২৯শে সেপ্টেম্বর সকালে  মাগুরা সড়ক ও জনপথ নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ বলেন, মামলা যখন চলমান রয়েছে তার মানে আদালতের অধীনে রয়েছে বিচার ব্যবস্থা। মার্কেট নির্মাণ বা স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি,অবশ্যই জমিটি সড়কের জন্য ধরে রাখার জন্য চেষ্টা করব। এটা আমাদের আইনি পদক্ষেপ। জমিটি নিয়ে যেহেতু আদালতে দুটি  মামলা হয়ে গেছে, এখন সুনির্দিষ্ট ভাবে বলা যাচ্ছে না জমিটির মালিক কে? তারা দাবি করছে তারা মালিক, আমরা দাবি করছি আমরা মালিক। আদালতের রায় প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন পক্ষই জমির মালিক নয়।
তিনি বলেন, জায়গাটি আমরা নজরদারির মধ্যে রেখেছি এবং জেলা প্রশাসক সাহেবের সাথে সমন্বয় করে কার্যকারী পদক্ষেপ নিব। যাতে করে আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই কেউ অন্যায় ভাবে মার্কেট নির্মাণ বা স্থাপনা নির্মাণ না করতে পারেন। সরকারি জমি দখল করে কেউ মার্কেট নির্মাণ করবে এটা হতে পারে না। সমাধান না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআরইউ