আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বানের উপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে মিরপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে ঈগল চত্বরে নারকীয় হত্যাচেষ্টা চালায় ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার টিপু সুলতান, তার ছেলে ও জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব খন্দকার তসলিম উদ্দিন নিশাত সহ প্রায় শতাধিক লোকজন। হামলার ঘটনায় রহমত আলী রব্বানসহ ১০ জন আহত হয়।
গুরুতর আহত হওয়ায় রহমত আলী রব্বান বর্তমানে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় ৩৮ জনকে আসামি ও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শনিবার রাতে একটি এজাহার দায়ের করেছেন রহমত আলী রব্বানের পুত্র ইমন। যার মামলা নং-১৩, তারিখ ২৮/০৯/২৪ইং।
এ মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন- খন্দকার টিপু সুলতানের বড় ছেলে জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব খন্দকার তসলিম উদ্দিন নিশাত, ছোট ছেলে খন্দকার মাহি, মিরপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আজাদুর রহমান আজাদ, মিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খন্দকার তুষার, খন্দকার মারজুল, খন্দকার মুরাদ মুরাদ, আনাজ শেখ, রাসেল আহাম্মেদ, মুশফিকুর রহমান সজল, তাসির, দেলবার, খায়রুল, বাপ্পি, রবিন, মিজানুর রহমান মিজান, জিয়ন, মনি, রাজন, রঞ্জু, সেলিম মোল্লা, রনি, রকিব হাসান খাঁন, জীবন, রিপন, সান্টু, রেজাউল, আমিরুল, ছৈরুদ্দিন, সাদেক, রিংকু জামাল উদ্দিন, আসিফ ও ফরজ আলী।
রহমত আলী রব্বানের পুত্র ইমন জানান-আমার বাবা মিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হক সাহেবের নামে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে সংগঠন বিরোধী নানা অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করার পরিপ্রেক্ষিত আমার বাবার সাথে খন্দকার টিপু সুলতান, খন্দকার তসলিম উদ্দিন নিশাত ও আজাদুর রহমান আজাদ সহ অন্যান্য আসামিদের সাথে কিছু দিন যাবত পূর্ব শত্রুতা থাকায় সেই শত্রুতার জের ধরে আসামীগণেরা গত ২৪-০৯-২০২৪ইং তারিখ বিকাল অনুমান ৩টার সময় মিরপুর থানাধীন পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে (ঈগল চত্বর) নামক স্থানে ফাতেমা ইলেকট্রনিক্স দোকানের সামনে আমার বাবা রহমত আলী রাব্বান দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পূর্ব হতেই পরিকল্পনা গ্রহণকারী আসামীগণেরা আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চারিদিক ঘিরে ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীগণের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র যথা পিস্তল, দেশী শার্টার গান সহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র চায়নিস কুড়াল, হাত-কুড়াল, রামদা, হাসুয়া, চা-পাতি, ছেনদা, লোহার পাইপ, লোহার রড, হাতুড়ি, হকষ্টিক, লাঠি-সোঠা প্রভৃতি নিয়ে জনতাবদ্ধ হয়ে আমার বাবাকে পথরোধ করে।খন্দকার টিপু সুলতানের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং হুকুম দিয়ে বলে যে, শালা রব্বানকে জীবনের মতো শেষ করে দে, শালাকে দল করার স্বাদ মিটাইতে দে। হুকুম পাওয়া মাত্রই তার বড় ছেলে খন্দকার তসলিম উদ্দিন নিশাত তার হাতে থাকা ধরালো চায়নিস কুড়াল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বাবার মাথায় কোপ দিলে বাবা তার ডান হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টাকালে বাবার ডান হাতের কব্জির উপরে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয় এবং বাবার কজির উপরে ৫টি রগ কেটে ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া, ডান হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়, মাথার উপর আঘাত করে, কানের উপর আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। আমার বাবাকে উদ্ধার করে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে অপারেশন করে একপর্যায়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত অন্যান্যদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মিরপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও রহমত আলী রব্বানের ভাই ইব্রাহিম আলী বলেন, একটা মিথ্যা অজুহাত দিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আওয়ামী লীগের লোকজনকে সাথে নিয়ে আসামীরা আমার ভাইয়ের উপর যে পৈশাচিক হামলা করেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি আমার দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছে এর বিচার চাই। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করতে চাই যে, আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হয়। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন-এ ঘটনায় মিরপুর থানায় একটা মামলা দায়ের হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি।
আরএস