লালমোহনে আবাসিক এলাকায় ইটভাটা, পরিদর্শনে পরিবেশ অধিদপ্তর

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৪, ০২:৫০ পিএম
লালমোহনে আবাসিক এলাকায় ইটভাটা, পরিদর্শনে পরিবেশ অধিদপ্তর

ভোলার লালমোহন উপজেলায় আবাসিক এলাকায় ইটভাটা তৈরি করে পরিবেশের এবং কৃষি ফসলের মারাত্মক ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়াও ওই ইটভাটার পাশের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুগুরিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে আঁখি ব্রিকস্ নামে ওই ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে চরভূতা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুগুরিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে প্রথমে স্থানীয়দের কাছ থেকে কিছু জমি লিজ নেন আনোয়ার হোসেন হিরণ হায়দার। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর।

জমি লিজ নেওয়ার সময় ইটভাটা স্থাপনের বিষয়টি গোপন রাখেন তিনি। এরপর ২০১৫ সালে ওই জমিতে ইটভাটা স্থাপন করেন আনোয়ার হোসেন হিরণ হায়দার। আইনের তোয়াক্কা না করেই আঁখি ব্রিকস্ নামে ওই ইটভাটাটি আবাসিক এলাকার মধ্যেই গড়ে তোলেন তিনি। সম্প্রতি ইটভাটাটি অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ভোলা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এলাকাবাসী।

ফেরদৌসি আক্তার লাকি নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, আঁখি ব্রিকসের পশ্চিম পাশেই আমাদের বাড়ি। বাড়িতে কেবল বাবা থাকতেন, আমরা ভাই-বোনেরা খুলনায় থাকি। বাবার মৃত্যুর পর আমাদের জমিগুলো ওই ইটভাটার মালিক জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছেন। তিনি ক্ষমতাবান হওয়ায় এই এলাকার কেউই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেননি। তাই আমাদের জমি ফিরে পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

মুগুরিয়া এলাকার মোস্তফা, ফারুক এবং মিজানসহ আরও বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, আমাদের এখানে এখন ফসল উৎপাদন কমে গেছে। ইটভাটার ধোঁয়ায় অনেক গাছ মরে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে বাড়িঘর কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। যার জন্য শিশুসহ এলাকার মানুষজন বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই আমরা দ্রুত এখান থেকে ইটভাটাটি অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।    

স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তোতা মিয়া ইটভাটাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। ইটভাটা এলাকায় তার যাওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা গিয়ে আঁখি ব্রিকসের মালিক হিরণ হায়দারের জবর দখল এবং অত্যাচারের বর্ণনা তুলে ধরেন।

পরিদর্শন শেষে ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তোতা মিয়া বলেন, আঁখি ব্রিকস্ নামের ইটভাটাটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্ত করতে এসেছি। ইটভাটা মালিকের কাছ এখন আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইবো। তিনি যদি অভিযোগে উল্লেখ করা কাগজপত্র দেখাতে না পারেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে আঁখি ব্রিকসের মালিক এবং সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন হিরণ হায়দার জানান, ইটভাটার আওতায় যেসব জমি রয়েছে ওইসব জমি আমার। যার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। আমি কারো জমি দখল করিনি। এছাড়া ইটভাটাটি আরও ৯-১০ বছর আগে স্থাপন করা হয়েছে। তখন পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্তের মাধ্যমে ওই এলাকায় আমাকে ইটভাটা স্থাপনের অনুমোদনও দিয়েছে। আমার কাছে সকল কাগজপত্র রয়েছে।

ইএইচ