শিক্ষক হত্যা

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি: প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৪, ০৪:৩০ পিএম
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি

খাগড়াছড়িতে মামুন হত্যার জের ধরে পাহাড়ে সৃষ্ট সংঘাত সহিংসতার রেষ কাটতে না কাটতেই ধর্ষণের অভিযোগে আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা নামে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে দিকে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি উপজেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিক্ষক সোহেল রানার বিরুদ্ধ এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তিনি আবার চাকরিতে ফেরত আসলে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা তাকে পত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অধ্যক্ষের রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে গণপিটুনি দেয়া হলে ওই শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ১৫-২০ জন পাহাড়ি কিশোর-যুবক ওই শিক্ষককে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করা খাগড়াছড়ি  আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি সদরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা এ সময় মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি স্থাপনা ভাঙচুর করে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, হাসপাতালে আনার আগে ওই শিক্ষক মারা গেছেন।

খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল বাতেন মৃধা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে গেল ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়িতে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের হলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এরপর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা । এ ঘটনায় খাগড়াছড়িতে তিনজন নিহত হয়।

আরএস/বিআরইউ