শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে প্রায় দু’মাস ধরে রাতভর পাহারা দিচ্ছে স্থানীয় যুবক ও এলাকাবাসী।
মানব, মাদক পাচার,চোরাচালান রোধে উপজেলার কুড়িপাইকা ও হীরাপুর গ্রামের সীমান্তে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।এতে সীমান্ত অপরাধ হ্রাস পেয়েছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,গ্রামবাসীর মধ্যে প্রায় শতাধিক যুবক একই রকমের পোশাক পড়ে বিভক্ত হয়ে লাঠি, বাঁশি ও টর্চলাইট হাতে নিয়ে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে।রাতে এলাকায় অপরিচিতদের দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পতনের পর থেকে এলাকার প্রায় শতাধিক যুবক দেশ ও জনগণের স্বার্থে মাদক ও মানব পাচার রোধে কুড়িপাইকা ও হীরাপুর সীমান্তে এলাকা পাহারা দিচ্ছেন।
তাদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি সভাপতি ডা: জহিরুল হক ভুইয়া (৫৫) নিজেও পাহারা দিচ্ছেন। তিনি জানান, ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পতনের পর থেকে তারা প্রায় শতাধিক যুবক দেশ ও জনগণের স্বার্থে মাদক ও মানব পাচার রোধে এখানকার কুড়িপাইকা ও হীরাপুর সীমান্তে এলাকা পাহারা দিচ্ছেন। চট্টগ্রামের সাবেক এমপি ফজলে করিমসহ মানব ও মাদক পাচারকারী কয়েকজনকে বিজিবির হাতে সোপর্দ করেছে তারা, আবার কিছু লোককে ভারতে অনুপ্রবেশ কালে আটক করে বাড়িঘরে ফেরত পাঠিয়েছে।
পাহারায় ব্যস্ত মনির হোসেন রানা (৩৫) জানায়, বিগত সরকার আমলের কিছু মাদকের গডফাদার হাসিনা পতনের শুরুতে নীরব ছিল কিন্তু বর্তমানে আবার সক্রিয় হয়েছে। তাই আমাদের সীমান্ত পাহারা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
মুনির মুন্না জানান, রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত তারা সীমান্তে পাহারা দিচ্ছেন। এর মধ্যে মাদক সেবনকারী ও মাদক পাচারকারীকে ধরে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।
সুহেল ভুইয়া (৩০) জানান, সীমান্ত পাহারায় মাদক ও মানব পাচার অনেক হ্রাস পেয়েছে। কিছু মাদক কারবারি ও সীমান্ত অপরাধীরা এই পাহারা তুলে নিতে হুমকি ধামকি দিচ্ছে কিন্তু তাদের এই সব হুমকে আমরা ভয় পাচ্ছি না। যতক্ষণ পর্যন্ত সীমান্ত থেকে মাদক নির্মূল না হবে ততক্ষণ সীমান্ত পাহারা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম বলেন, আখাউড়া উপজেলার হীরাপুর ও বড় কুড়িপাাইকা সীমান্তে মাদক, চোরাচালান,মানব পাচার রোধে স্থানীয়ভাবে ওই এলাকার যুবকেরা রাতে পর্যায় ক্রমে পাহারা দিচ্ছে আখাউড়া থানার আহ্বানে এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং উপজেলার অন্যান্য গ্রাম গুলিতে যদি এই উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
এসব স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কার্যক্রমের জন্য আখাউড়া থানা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বিআরইউ