টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা বাজারগুলোতে লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম।
বর্তমানে দেশের অন্যতম আলোচ্য বিষয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি। কালোবাজারি, মুনাফাখোর, মজুতদার প্রভৃতির কারণে খাদ্যদ্রব্য, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মরিচ, চিনি, দুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য দ্রব্যগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিন এবং ক্রমে এসব পণ্য সংগ্রহ কঠিনতর হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর জন্য।
প্রতিটি পণ্যের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। কোনোভাবেই কমছে না এসব দ্রব্যের মূল্য। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে প্রতিটি পণ্যের দাম।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিসহ সবজির বাজারে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে দ্রুত বেড়ে যায় সবজির দাম। এছাড়াও সংকটের কারণেও জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বৃদ্ধি।
নাগরপুর উপজেলা সদর অন্যতম বৃহৎ বাজার (সাপ্তাহিক) বুধবার হাট নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। কোনোভাবেই কমছে না প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। বাজার করতে গিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ছেন দিনমজুর খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
নাগরপুর সদর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, পেঁয়াজ বর্তমানে ১১০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, শুকনো মরিচ ৪০০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, গাজর ১৮০-২০০ টাকা, টমেটো ১৬০-১৮০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা, আলু ৫০-৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, লেবুর কেজি ৫০-৬০ টাকা এছাড়াও ফল এবং শাক-সবজিও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।
গরিবের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে যে ডিম ও পাঙাস মাছের ভূমিকা অপরিসীম, তার দামও এখন নাগালের বাইরে।
গত কয়েক মাস আগে ৩৫-৪০ টাকা হালি ডিম ও ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে পাঙাস মাছ গেলেও এখন বিক্রি হচ্ছে (ডিম হালি) ৬০ টাকা ও (পাঙাস মাছ) কেজি ২০০-২২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দামও ক্রয় ক্ষমতার ঊর্ধ্বে। কেজি প্রতি পোল্ট্রি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।
এদিকে চাল, ডাল, তেল ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার ঊর্ধ্বে। সব মিলিয়ে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই বাজার ব্যবস্থা।
বাজার করতে আসা হাফিজুল ইসলাম জানান, কাঁচাবাজারসহ সব জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে এতে করে আমাদের মতো অল্প আয়ের লোকদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ বাজার করতে গিয়ে অল্প কিছু কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে করে সংসার চালাতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ অতিমাত্রায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চমূল্যে তারা কিনছেন তাই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তীব্র দাবদাহ আর বৃষ্টিতে সবজির গাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।
এবিষয়ে কথা হয় চৌহালি এস বিএম কলেজের সরকারি অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন হোসেনের সাথে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে জীবনযাত্রার সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি পরিবার কীভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবনকে নির্বাহ করবে তা নির্ভর করে তাদের আয়, চাহিদা এবং দ্রব্যমূল্যের ওপর। প্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের মূল্য যখন সহনীয় পর্যায়ে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে তখন তাদের জীবন কাটে স্বস্তি।
ইএইচ