রাজশাহীর গোদাগাড়ী পদ্মা নদীর চর অঞ্চলে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার গত দুই সপ্তাহে ৫০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে চরের বসবাসকারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরের বাসিন্দাদের অনেকেই এখন ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ সবকিছুই নৌকায় তুলে নিয়ে চলে আসছেন এপারে। খুঁজছেন বসবাসের নতুন ঠিকানা।
নৌকাগুলোর কোনোটিতে গরু-ছাগল, কোনোটিতে বস্তায় বস্তায় ধান, আবার কোনোটিতে চর থেকে ভেঙে নিয়ে আসা বাড়ির চাল, টিনের ছাউনি ও আসবাবপত্র।
গোদাগাড়ী উপজেলার আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর বয়ারমারি গ্রামের আসগর আলীর বলেন, প্রতিবছরই পদ্মায় তাঁদের জায়গাজমি ভাঙে। এরই মধ্যে তার ১৫ বিঘা কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়িও সরিয়েছেন ছয়বার। এবার উপজেলার মাছমারা গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেবেন তারা।
চর আমতলা খাস মহলের বাসিন্দা আলাউদ্দিন জানান, কয়েক দিন ধরে নদীর পানি বাড়ায় তাদের এলাকায় কয়েকটা রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে টমেটো ও ধানের খেত। চর বয়ারমারি গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়ি সরিয়ে নিতে হয়েছে। চর বয়ারমারির পাশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার জেলেপাড়া গ্রামেও তীব্র নদীভাঙন চলছে। পোলাডাঙ্গা এলাকায় একটি সেতু ছিল। নদীভাঙনে ভেঙে গেছে সেটি।
কোনো সহযোগিতা না পেয়ে গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহবুল আলম বলেন, গত দুই সপ্তাহে নদীগর্ভে ৫০টি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে এবং ২০০টি বাড়ি-ঘর সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ভোলা বলেন, চর বয়ারমারি চর আমতলা খাসমহলসহ পার্শ্ববতী ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে ২০টি বাড়ি ও ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা আসেনি।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে নদী ভাঙনে বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি, রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। কারণ চরের অঞ্চলে বেলে মাটি হওয়ায় ভাঙ্গনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারিভাবে সাহায্য করার জন্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে বলে তিনি জানান।
ইএইচ