কিশোরগঞ্জে ৩৬৫ মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
কিশোরগঞ্জে ৩৬৫ মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে

কিশোরগঞ্জে এবার ৩৬৫টি মণ্ডপে ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।

সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবকে ঘিরে কিশোরগঞ্জে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা স্থাপনের শেষ মুহূর্তের কাজ।

এর মধ্যে প্রতিমার গায়ে তুলির শেষ আঁচড় দেওয়ার পর প্রস্তুত করা হয়েছে পূজার জন্য। এখন চলছে প্যান্ডেলে সাজসজ্জার কাজ। অপরদিকে পূজাকে শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে সব ধরনের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সনাতন শাস্ত্র অনুযায়ী হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তদের বিশ্বাস শরৎকালে আদ্যাশক্তি মহামায়া দুর্গাদেবীর আগমনি বার্তায় ধরণি পুলকিত হয়ে উঠে। তাই দেবী বরণের আগ মুহূর্তে ভক্তদের মাঝে লেগেছে আনন্দের দোলা।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা মনে করেন দুর্গাদেবী সুখ-শান্তির বার্তা নিয়ে তাদের মাঝে আসেন প্রতি বছর। এবারো দুর্গা মায়ের আগমনে পুরো বিশ্ব যেন শান্তিময় হয়ে উঠে এমনটাই প্রার্থনা তাদের।

জেলা শহরের অপু সাহা জানান, মায়ের আগমন উপলক্ষ্যে আমরা সবাই বেশ খুশি। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেছি। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মায়ের রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করব।

জেলা শহরের সাহাপাড়া এলাকার রাজু সাহা বলেন, আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি কখন আসবে মাহেন্দ্রক্ষণ। মায়ের রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করব। এবার জগৎ জননী মায়ের কাছে দেশের জন্য দশের জন্য প্রার্থনা করবে মা যেন সব রোগশোক থেকে আমাদের মুক্ত রাখেন।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নারায়ণ দত্ত প্রদীপ জানান, এ বছর মায়ের আগমনে আমরা অনেকটাই পুলকিত। আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। মণ্ডপে প্রতিমা আনা হয়েছে। কিছুটা সাজসজ্জার কাজ চলছে। এখন অপেক্ষা ক্ষণকাল গণনা করা। আমরা পঞ্জিকার তিথি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাড়া-প্রতিবেশীসহ পূজা কমিটির সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মায়ের রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করব।

জেলা শহরের ৩২ মন্দিরের পুরোহিতরা জানান, হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী এ বছর দেবীদূর্গা দোলায় আগমন ও হাতিতে গমন করবেন। এ বছর মা যেন বিশ্ববাসীকে সুখে-শান্তিতে রাখেন সেই প্রার্থনা করব।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নারায়ণ দত্ত প্রদীপ জানিয়েছেন, জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভায় এবার মোট ৩৬৫টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। গতবছর ছিল ৪০৩টি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজাবে রহমত জানিয়েছেন, এবার দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা তদারকিতে ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা পর্যায়ে ৬টি এবং ১৩ উপজেলায় ১৩টি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মোস্তাক সরকার জানিয়েছেন, পূজা উপলক্ষ্যে বাহিনীর পোশাকে এবং সাদা পোশাকে সহস্রাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট শুভ্র চৌধুরী জানিয়েছেন, এবার জেলায় দুই হাজার ৩৮৮ জন আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে ৮ জন পুরুষ ও দুজন মহিলা আনসার এবং দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে ৬ জন পুরুষ ও দুজন মহিলা আনসার সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে। এছাড়া সেনা ও র‌্যাবের টহল দলও থাকবে বলে জানা গেছে।

আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপী দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

ইএইচ