ফরিদপুরে পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদে বাধা দেয়ায় চাচার ওপর ভাতিজার হামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম
ফরিদপুরে পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদে বাধা দেয়ায় চাচার ওপর ভাতিজার হামলা

ফরিদপুরের মধুখালীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন দুই সহদোর। এরমধ্যে ছোট ভাইকে পৈত্রিক ভিটা (বসতবাড়ি) থেকে উচ্ছেদের পায়তারায় লিপ্ত হয়েছেন প্রবাসী বড় ভাই।

কৌশলে ছোট ভাইয়ের বসবাসরত সংলগ্ন পৈত্রিক জমি নিজনামে দলিল করে নিয়েছেন, এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ছোট ভাইয়ের পরিবার। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকারও হয়েছেন। এমনকি বসবাসরত জায়গা থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।

এসব অভিযোগ করছেন, মধুখালী পৌরসভার পশ্চিমগাড়াখোলা এলাকার বাসিন্দা মো. জাহিম আলী বিশ্বাস (৪০)। তাঁর অভিযোগ বড় ভাই মো. সোহেল বিশ্বাস (৪৬)সহ ভাবি-ভাতিজার দিকে। তাঁরা ওই এলাকার মৃত জেকের আলী বিশ্বাসের পুত্র।

গত ৭ অক্টোবর মো. জাহিম আলী বিশ্বাসের ওপর হামলা করে বখাটে ভাতিজা মো. মুন্না বিশ্বাস (২০) সহ বড় ভাইয়ের পরিবার। এতে মাথা ফেটে যায় তাঁর। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই সময় তাঁদের ঘরবাড়িও ভাঙচুর করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহিম আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন যাবৎ পৈত্রিক জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি। কিন্তু বড় ভাই বিদেশি টাকার প্রভাবে কৌশলে সেই জমি ফুফুদের নিকট থেকে দলিল করে নিয়ে নিছেন। বিষয়টি আমাকে কখনো জানায়নি, এমনকি আমি জানিই না। এতে আমার বসবাসরত ঘর ছাড়া সব বড় ভাইয়ের দখলে চলে যায়।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বাড়ির গেইটের কাজ করতে গেলে হঠাৎ করে ভাতিজা মুন্নাসহ কয়েকজন এসে বাঁধা সৃষ্টি করে। তখন আমি তাঁদের কাছে জানতে চাই, কেন আমার কাজে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। তাঁরা আমাকে বলে- ০.৫৩ শতাংশ জমি কিনে নিয়েছি। একথা জানার পর আমি আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রিয়েমশন মামলা করি। পরবর্তীতে মামলা তুলে নেয়ার জন্যও আমার বড় ভাই বিদেশ থেকেই মোবাইলে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। এমনকি তাঁর ছেলে বখাটে মুন্নাকে দিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত সোমবার (০৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আমাকে বেদম মারধর করে মুন্না ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। এ সময় আমার স্ত্রী সন্তানকে মারধর করে।

এ সময় জাহিম আলী কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘বড় ভাই আমাকে এই জায়গায় রেখে বিদেশে চলে যায়, ভাবছিলাম বাকি জীবন এখানে থাকব। কিন্তু বিদেশে গিয়ে বড় ভাই সব ভুলে গেছে, এখন তাঁর অনেক টাকা হয়েছে। আমার এই বাড়ি নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমাকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে, এমনকি বসবাসের ঘর থেকে উচ্ছেদ করার জন্য হুমকি-ধামকি দিতেছে। আমার ছোট দুই সন্তান নিয়ে এখন আমি কোথায় যাবো, কোথায় থাকব। প্রশাসনের কাছে আমি সুষ্ঠু সমাধান ও এর বিচার চাই।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বিষয়ে জানতে সোহেল বিশ্বাসের বাড়িতে যাওয়া হয়। এসময় কথা হয় সোহেল বিশ্বাসের ছেলে মুন্না বিশ্বাসের সাথে। কিন্তু মুন্না বা তাঁর পরিবার কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। শুধু বলেন, ‘ওই জমি আমরা কিনে নিয়েছি, আমাদের জমিতে ও (জাহিম) থাকতে পারবে না। আপনারা যা পারেন তাই করেন।

বিষয়টি নিয়ে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম নুরুজ্জামান বলেন, ভাইয়ে ভাইয়ে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা থানায় অভিযোগও দিয়েছেন। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক কেন্দ্রিক সেহেতু আমরা চেষ্টা করব, যাতে ভ্রাতৃত্ববন্ধন টিকে থাকে, সেভাবে সমাধান করার।

আরএস