৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের `হোয়াইট বিচ` আবাসিক হোটেল দখলে নিয়েছে একটি চক্র।
সেখানে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে হোটেলটিতে আগুন, ভাঙচুরসহ রীতিমতো তাণ্ডব চালায় চক্রটি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের (১৫ ডিসেম্বর) হোটেলটির মালিক উখিয়ার রত্নাপালংয়ের মরহুম সাহাব উদ্দীন চৌধুরীর স্ত্রী শাহনূর বেগম ও নির্মাণকারী কোম্পানি ওয়াহিদুল কাদের টিটুর কাছ থেকে ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেন মোহাম্মদ শাহেদুজ্জামান বাহাদুর, মুজাহিদুল ইসলাম, মো. মীর কাসেম আলী ও নুরুল আনোয়ার মুন্না।
চুক্তি অনুযায়ী দীর্ঘ আড়াই বছর সুনামের সঙ্গে হোটেলটি পর্যটকদের সেবা প্রদান করে আসলেও ৫ আগস্ট এসে দখলবাজদের খপ্পরে পড়েন। সেদিনই ভাঙচুর ও এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। দখলে নিতে কর্মীদের মারধর করে চক্রটি। প্রাণে বাঁচতে হোটেলটির কর্মীরা পালিয়ে রক্ষা পান। পরে হোটেলটির নাম পরিবর্তন করে এখন `মারমেইড বে ওয়াচ রিসোর্ট করে দেয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এসব ঘটনা সিসিটিভিসহ অসংখ্য মানুষের মুঠোফোনের ভিডিও রক্ষিত হলেও উল্টো ভাড়াটিয়া মালিকদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যে মামলা দায়ের করেন দখলবাজ চক্রটির সদস্য শাহাদাত বখত ইয়াছিন। তাকে ইন্ধন দিচ্ছেন অপর সদস্য সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল, তার স্ত্রী উম্মে আইমন, সিরাজুল ইসলাম, মো. আশরাফুল ইসলামসক শতাধিক দুর্বৃত্ত।
তাদের থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে একটি বিতর্কিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহীন মিয়া।
সিসিটিভি ফুটেজে দখলবাজদের হামলা-ভাঙচুর স্পষ্ট হলেও তিনি উল্টো মিথ্যা মামলাটির সত্যতা পেয়েছেন বলে একটি উদ্ভট প্রতিবেদন দেন। যা নিয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভাড়াটিয়ারা জানায়, চুক্তি অনুযায়ী গেল আড়াই বছর ধরে সুনামের সাথে আমরা ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিলের নেতৃত্বেন তার স্ত্রী উম্মে আইমন, শাহাদ বখত ইয়াছিন, সিরাজুল ইসলাম, মো. আশরাফুল ইসলামসক শতাধিক দুর্বৃত্ত এসে আমাদের তছনছ করে দিয়েছে।
হোটেলটি দখলে রেখে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে এসআই শাহীনও তাদের কাছ থেকে মোটা অর্থ নিয়ে একটি সত্যকে বিতর্কিত করেছেন। তিনি যে প্রতিবেদন দিয়েছেন ঘটনা তার উল্টো। প্রকাশ্যে হামলাকারীরা থাকলেও তাদের বিষয়ে প্রতিবেদন না দিয়ে উল্টো আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে, যাতে আমরা হোটেলটি না যেতে পারি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহীন বলেন, `দায়িত্বভার নেয়ার পর কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তার আলোকে ও স্বাক্ষীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে যা প্রমাণিত হয়েছে তাই প্রতিবেদনে লিখেছি। অর্থের বিনিময়ে প্রতিবেদন দেয়ার প্রশ্নই আসে না।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, `আমি নতুন যোগদান করেছি। যদি কেউ বিষয়টি নিয়ে আমাকে লিখিতভাবে জানায় তাহলে তদন্ত করে যদি ওই তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি কোন অনিয়মের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় পুলিশি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইএইচ