নান্দাইলে মুখ থুবড়ে পড়েছে পোস্ট-ই-সেবা কার্যক্রম

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৪, ০১:৩৮ পিএম
নান্দাইলে মুখ থুবড়ে পড়েছে  পোস্ট-ই-সেবা কার্যক্রম
ছবি: আমার সংবাদ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন কর্মসূচির আওতায় পোস্ট-ই-সেবা কেন্দ্রের কার্যক্রমএখন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।

পোস্ট-ই-সেবা কেন্দ্রে দেওয়া দামি প্রযুক্তির জিনিসপত্রগুলো এখন বেশিরভাগই ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার কোথাও সেগুলো ব্যবহার না করায় অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য ২০১৪ সনে নান্দাইল উপজেলায় ১১টি পোস্ট-ই-সেন্টার কার্যক্রম চালু করা হয়েছিল। ১১ জন উদ্যোক্তার বিপরীতে মোট ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকার দামি প্রযুক্তির মালামাল প্রদান করা হয়েছিল। প্রতি উদ্যোক্তার নিকট পোস্ট-ই-সেন্টারের জন্য ৩টি ল্যাপটপ, ২টি প্রিন্টার, ১টি স্ক্যানার, ইন্টারনেট মডেম, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সোলার প্যানেলসহ প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার মালামাল সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু অদক্ষ, স্বার্থলোভী ইডিএ ও উদ্যোক্তাদের অবহেলার কারণে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। শুধু তাই নয় জনসাধারণের কাছে পোস্ট-ই-সেন্টারের মাধ্যমে ডিজিটাল সেবা পাবার ম্যাসেজটাই এখনও অজানা। যার ফলে পোস্ট-ই-সেন্টারের মাধ্যমে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, প্রিন্টিং, কম্পোজ, ছবি প্রিন্ট, স্ক্যানিং, ই-লার্নিং, ই-মেইল, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ভর্তি ও চাকুরির আবেদন, কৃষি বিষয়ক তথ্য, দেশ-বিদেশে ভিডিও কনফারেন্সসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ১০৫টি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

পোস্ট-ই-সেন্টারের নাম পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত নাম দিয়ে উদ্যোক্তারা নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে না বসে বিভিন্ন বাজারে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। ডাক বিভাগকে বিভিন্ন অযুহাতে মাসিক রাজস্ব ফি ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে উদ্যোক্তারা।

তন্মধ্যে মাইজবাগ, গোসাইচান্দুরা সহ আরেকটি উদ্যোক্তা সেন্টারের মালিক প্রতি মাসে নামমাত্র ১২০ থেকে ১৫০ টাকা রাজস্ব প্রদান করছে। অপরদিকে অদক্ষ উদ্যোক্তার কারণে তথ্যসেবা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়েছে বিধায় সাধারণ মানুষজন পোস্ট-ই-সেন্টার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

ফারুক আহমেদ উদ্যোক্তা জানান, পোস্ট-ই-সেবার কাজ করে এখন পোষে না। তাই বন্ধ করে দিয়েছি। যন্ত্রপাতি ঘরে পড়ে থাকায় তা নষ্ট হয়ে গিয়াছে। অনেকগুলো ফিরত দিয়েছি।

নান্দাইল উপজেলা পোস্ট মাস্টার মো. গোলাম আজম বলেন, ২০১৪/১৫ সনের প্রকল্প এটি। উদ্যোক্তারা কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে, আবার কেউ যন্ত্রপাতি ঘরে ফেলে রেখেছে। কেউ কিছু কিছু ফেরত দিয়েছে। তারপরেও আমরা নতুন উদ্যোক্তার মাধ্যমে সেগুলো চালু করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল শাকিল আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমার জানামতে প্রকল্প চালু হওয়ার পরপরই করোনার কারণে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তা নতুনভাবে চালু করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছে। শীঘ্রই পোস্ট অফিস ও পোস্ট-ই-সেন্টারগুলো আবার নতুনরূপে জনগণের সেবায় নিয়োজিত হবে।

বিআরইউ