৩ বছর পর কবর থেকে তোলা হলো দেহাবশেষ

মাহমুদুর রহমানই কী হারিছ চৌধুরী?

মো. শরিফ শেখ, সাভার থেকে প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম
মাহমুদুর রহমানই কী হারিছ চৌধুরী?

২০২১ সালে সাভারে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা মরদেহ বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর কি না তা নিশ্চিত হতে কবর থেকে দেহাবশেষ উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক টিম।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর এলাকায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসার ভেতরে কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনে কাজ শুরু করা হয়। নমুনা সংগ্রহ ও মরদেহ উত্তোলনের কাজ শেষ হয় দুপুরে।

হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা মরদেহ উত্তোলন করেন। এ সময় সামিরা তানজিনসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসার কবরস্থানের একটি অংশে খোঁড়া হচ্ছে। সেখানে পুলিশ ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, হারিছ চৌধুরীর পরিবারের সদস্য ও মাদ্রাসার শিক্ষকেরা উপস্থিত রয়েছেন।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে লাশটি কবর থেকে তোলা হয়। পরে মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি। আর মরদেহটি সংরক্ষণের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এ সময় হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, তিন বছর আগের ঘটনা হলেও আমার বাবার মৃত্যু মীমাংসিত নয়। তিনি একজন জাতীয় নেতা ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার প্রাপ্য সম্মান তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। ১৫ বছর তার বিরুদ্ধে চরিত্রহনন, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। কোনো সন্তান চাইবে না তার বাবার মৃত্যু নিয়েও এমন রহস্য থাকুক। এখন আমরা চাই, তিনি যাতে সম্মান পান। তাকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হোক। তিনি দেশের জন্য কাজ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তার সম্মান ও স্বীকৃতি ফেরত চাই।

মাহমুদুর রহমানের জানাজা পড়ান মাওলানা আশিকুর রহমান কাশেমী। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মাহমুদুর রহমান দাফন এখানে করা হয়। সেখানে হাফেজ ও মাদরাসা ছাত্ররা অংশ নেয়। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থায় কোভিডের ওই সময় মরদেহ দাফন করি। আমি জানাজায় ইমামতি করি। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত আমরা তাকে মাহমুদুর রহমান বলেই জানি। তবে আমরা তার পরিবারের মতো, এটা চাই উনার প্রকৃত পরিচয় বেরিয়ে আসুক। দেশবাসী জানুক তার পরিচয়, আমরাও জানি।

সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট এস এম রাসেল ইসলাম বলেন, হারিছ চৌধুরীর মেয়ের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মাহমুদুর রহমানের (হারিছ চৌধুরী) মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে হারিছ চৌধুরীর যে কবর তার মেয়ে শনাক্ত করেছে, সেখান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ফরেনসিক বিভাগ মরদেহের ডিএনএ শনাক্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছে। এ অনুযায়ী ডিএনএ টেস্ট করা হবে। ডিএনএ থেকে যদি শনাক্ত হয় এটি হারিছ চৌধুরীর মরদেহ সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মরদেহ আলামত সংগ্রহের পরে এটি সংরক্ষণের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ইএইচ