মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনে বিলীনের পথে নবীনগরের কয়েকটি গ্রাম

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ০২:৪৯ পিএম
মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনে বিলীনের পথে নবীনগরের কয়েকটি গ্রাম

ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের মানিকনগর থেকে কান্দাপাড়া বরিকান্দি পর্যন্ত এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন যে কোন মুহূর্তে কয়েকটি গ্রাম মেঘনা নদীতে বিলীন হওয়ার ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।

এ নিয়ে গেলো কয়েক দিন আগে শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘরের সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়, উক্ত মানববন্ধনে গ্রামের সর্বস্তরের  নারীপুরুষ,যুবসমাজ,ছাত্রজনতা,বয়স্ক বৃদ্ধা মানুষজন নদীর পাড়ে ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে ঐ কর্মসূচি পালন করেন।
ঐ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন,বিদ্রোহী কাওসার আলম,সাকিব আহমেদ জামাল,অরুন মিয়া,সেন্টু মোল্লা,নুর মোহাম্মদ নীবির,সামসুল আলম,সাত্তার মিয়া,মোমেন আলম সহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।

এসময় বক্তারা বলেন, বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় সরকারিভাবে বালু উত্তোলনের ইজারা থাকলেও ইজারাদারগন শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের নাছিরাবাদ, চরমানিকনগর মৌজায় ঢোকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করছেন।

এর ফলে সাহেবনগর, নাছিরাবাদ, মানিকনগর বাজার, শ্রীঘর কান্দাপাড়া, বড়িকান্দি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে, তাই এই অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার নদীর পাড়ের ফসলি জমি, বাজার ও শতশত ঘরবাড়ি রক্ষার্থে স্থায়ীভাবে বড়িকান্দি থেকে মানিকনগর বাজার পর্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ঐ এলাকায় গিয়ে কথা হয় কান্দাপাড়া গ্রামবাসী সহ অনেকের সাথে, উনারা জানান– প্রতিদিন মেঘনা নদীতে শতাধিক ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় আমাদের গ্রাম টি ভাঙতে শুরু করেছে মাত্র এক মাসে হারিয়ে গেছে নদী গর্ভে তিন বিঘা জমি।

প্রতিদিন জমি ভেঙে নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে এখন যদি নদীর পাড় গুলো তে বালির বস্তা সিমেন্টের বস্তা বা ব্লক ফেলা না হয় তাহলে সমস্ত গ্রামটি বিলীন হয়ে যাবে কান্দাপাড়া গ্রাম সহ কয়েকটি এলাকার মুছে যাবে নাম নিশানা, তাই অবিলম্বে মেঘনা নদীর অবৈধ ড্রেজার বন্ধ ও আমাদের নদী পাড়ে ব্লক দেওয়ার অনুরোধ করছি নবীনগর উপজেলা প্রশাসন ও বর্তমান সরকারের কাছে, এই ড্রেজারগুলোর কারণে বাড়ি ঘর ভেঙে যাচ্ছে এরা দিনের বেলা নদীর মধ্যখানে ও রাতের আঁধারে আমাদের পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে শতাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে, এরা অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কে কিছু বলা যায় না আর কিছু বললে ও এদের সাথে থাকা বন্দুকধারী সন্ত্রাসী বাহিনীরা যেকোনো মুহূর্তে আমাদের উপর আক্রমণ করে ফেলবে এবং প্রতিনিয়তো চলে গোলাগুলির মতন ঘটনা।

এ সময় উপস্থিত লোকজন জানান, নবীনগর উপজেলা প্রশাসন সহ সর্বমহল কে জানানোর পর ও কোন প্রকার সারা পাচ্ছি না। 
এ বিষয় এ নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে আমাদের অভিযান চলছে তা নিয়মিত চলবে, এবং নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিআরইউ