কটিয়াদীতে নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুণ, বিপাকে সাধারণ মানুষ

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
কটিয়াদীতে নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুণ, বিপাকে সাধারণ মানুষ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমেই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা এই মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। কাঁচামাল, শাকসবজি, মাছ, মাংসসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি বাজারের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। পরিস্থিতির কারণে অনেক পরিবার তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, ফলে জীবনযাত্রার মান নিম্নগামী হয়ে পড়েছে।

দুই সপ্তাহেই দ্বিগুণ দাম:

কটিয়াদীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে শাকসবজি, মাছ-মাংসের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। একসময় যেসব পণ্য স্বাভাবিক দামে কেনা যেত, এখন তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। যেমন, কাঁচামরিচ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৮০০-৫০০ টাকা প্রতি কেজি দরে, করলা ৮০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০-১২০ টাকা, আলু ৬০-৭০ টাকা, শিম ৩০০-৩৫০ টাকা, বেগুন ১০০-১২০ টাকা, কাঁকরোল ৮০-১০০ টাকা, বরবটি ১৫০-১৭০ টাকা, শসা ৭০-৮০ টাকা, এবং উচ্ছে ১০০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানাচ্ছেন, বাজারের এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এর আগে তারা কখনোই দেখেননি। এমনকি স্বাভাবিক সময়ে যেসব পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষজনও অনায়াসে কিনতে পারতেন, সেগুলো এখন তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

কটিয়াদী বাজারের সবজি বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা চাইলে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারতাম, কিন্তু সরবরাহকারীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারের এমন পরিস্থিতি থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি, পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধি এবং পণ্য আমদানি কমে যাওয়ার কারণে দাম বেড়েছে।

অন্যদিকে, নীতিনির্ধারকদের মতে, বাজারে প্রশাসনের তদারকির অভাবেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। বাজারে পর্যাপ্ত নজরদারি এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এই অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে।

এলাকাবাসীর দাবি, বাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ ও নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ তদারকি ব্যবস্থা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমানো সম্ভব হবে।

বাজারের এই মূল্যবৃদ্ধি শুধু সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের সার্বিক জীবনযাত্রাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা ছাড়া এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিআরইউ