শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

বাগাতিপাড়ায় ২৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৪, ০৩:২৯ পিএম
বাগাতিপাড়ায় ২৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৬টি। এই ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৮টিতেই দীর্ঘদিন থেকে পদ শূন্য রয়েছে প্রধান শিক্ষকের।

আবার অনেক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৫ থেকে ৮ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এর ফলে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম।

বাগাতিপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬টিতে প্রধান শিক্ষক কর্মরত আছেন।

অপরদিকে ২৮টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আর বাকি দুটি ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের নামো হাটদৌল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পাঁকা ইউনিয়নের তকিনগর সরকারি বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক পদ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তাই উপজেলায় অর্ধেকের বেশি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক না থাকা বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১০-১১ বছর ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রায় বন্ধই রয়েছে।

এছাড়া দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কম। এর মধ্যে আবার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হয়। আর ওই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাকে বিভিন্ন মিটিং, অফিসের রুটিন কাজ এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে শিক্ষা অফিসে যাতায়াত করতে হয়। ফলে তার নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং বাকি শিক্ষকদের উপর পাঠদানের বিষয়ে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়।

আবার প্রধান শিক্ষক না থাকলে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণেও বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। ফলে দীর্ঘ সময় উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকাতে প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

উপজেলার ভিতর ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, প্রায় আট বছর থেকে তাদের বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এর ফলে শ্রেণি পাঠদানের পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের সকল কাজকর্ম তাকে করতে হয়। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে এখন তিনিসহ মাত্র চারজন শিক্ষক রয়েছেন। ফলে কোন শিক্ষক ছুটিতে থাকলে এবং তাকে অফিসের কাজে কোথাও যেতে হলে বা অফিসের রুটিন কাজে ব্যস্ত থাকলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হয়। তাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রধান শিক্ষক বলেন, একজন সহকারী শিক্ষক যখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকেন তখন অনেক সহকারী শিক্ষকরা মনস্তাত্বিকভাবে তাকে মেনে নেয় না। ফলে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ড. সাবরিনা আনাম বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় সারাদেশেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে এই সমস্যা কেটে যাবে।

ইএইচ