লালমনিরহাটে প্রধান শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম
লালমনিরহাটে প্রধান শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে ষড়যন্ত্রের নিন্দা ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ ঘনেশ্যামে তার নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন বলেন, গত ২২ অক্টোবর আমার প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যা আমার ৩৩ বছরের চাকুরি জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সবচেয়ে বড় দুঃখজনক ঘটনা। একদল স্বার্থলোভী মহল এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষক তাদের নিজ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, আমার প্রতি তাদের উগ্র আচরণ আমাকে ব্যথিত করেছে। 

ওইদিন সকালে আমি বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ, নথিপত্র ও তথ্য সংগ্রহের জন্য এরই নিমিত্তে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে আমার কার্যালয়ে ডাকি। তার সাথে কথাবার্তা চলাকালে হঠাৎ আমার প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক অধর চন্দ্র রায় কক্ষে প্রবেশ করে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় অপমান ও গালিগালাজ শুরু করে আমি এর প্রতিবাদ করলে আমার গায়ে হাত তুলে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। এই সময় প্রতিষ্ঠানে এসএসসি-র নির্বাচনী পরীক্ষা ও অন্যান্য ক্লাস চলমান ছিল। অধর চন্দ্র ওই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের ডেকে আমার বিরুদ্ধে উসকিয়ে দেয় এবং আমার উপর চড়াও হতে নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি সে (অধর) বহিরাগত কিছু গুন্ডা খালেক, বারেক, আনোয়ার, রাজুকে নির্দেশ দেয় আমাকে আক্রমণ করতে এবং আমাকে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে আমাকে মারতে উদ্যত হয়। আমার কাছে থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ আমার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী মোখলেসুর রহমান ও ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট আশরাফুল ইসলাম আমাকে সাহায্য করতে আসেন। 

ইতোমধ্যে বহিরাগত লোকদের বিভ্রান্তমূলক কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের নেতৃত্বে আমার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আমার কার্যালয়ের দিকে তেড়ে আসে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে প্রতিষ্ঠানের একজন নারী কর্মচারীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে ও আমাকে সাহায্য করতে আসা মোখলেসুর রহমান ও আশরাফুল ইসলামকেও বেধরক মারা শুরু করে। এই অবস্থা দেখে আমাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের কয়েকজন আমাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু আক্রমণকারীরা তাদের ওপর ও চড়াও হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।তিনি আরো বক্তব্যে বলেন, সে ঘটনার পর আমাকে আমার কক্ষে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। কিছু সময় পরেই বহিরাগতরা উদ্বুদ্ধ করে অধ্যক্ষের কার্যালয় ভাংচুর করে। বহিরাগতদের উসকানিতে কোমলমতি কিছু শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়। ভাঙচুর করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা সরঞ্জামও। এসময় কয়েকজন আহত হয়। পরে উক্ত ঘটনাকে মিথ্যাভাবে প্রচার করার উদ্দেশ্যে সেই স্বার্থান্বেষী লোকেরা গল্প সাজিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে এবং আমাকে নানাভাবে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়া নানাধরণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও বক্তব্যে বলেন তিনি।

দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল এন্ড কলেজের কিছু শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একদল দুষ্কৃতকারী তাদের স্বার্থ হাসিলের প্রচেষ্ঠা করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

আরএস