নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় রাতের আঁধারে এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এসময় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আক্রমণকারীরা। এ ঘটনায় গৃহবধুদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতেও সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর অব্যাহত রাখলে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সন্ত্রাসীদের হামলায় বাড়ির দুই গৃহবধুসহ তিনজন আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাতে হাতিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের গুল্যাখালী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে প্রবাসীদের পিতা বৃদ্ধ অলি উদ্দিন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে হাতিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
থানায় লিখিত অভিযোগে অলি উদ্দিন উল্লেখ করেন যে, রোববার রাতে হঠাৎ কিছু সন্ত্রাসী তাদের বাড়িতে আক্রমণ করে উত্তর পাশে সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে। বড় বড় হেমার দিয়ে প্রাচীরে আঘাত করার শব্দ শুনে বাড়িতে থাকা মহিলারা এগিয়ে এলে তাদেরকে আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। ১০-১৫মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীরা প্রায় ৫০ ফুট সীমানা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পেলে। পরে বাড়িতে প্রবেশ করে তারা মহিলাদের উপর আক্রমণ করে। এসময় মহিলাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উপরও আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রবাসী ছাইফুর রহমানের স্ত্রী সূবর্ণা, বোন আকলিমা ও ভাই ওহিদুর রহমান আহত হয়। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে হাতিয়া থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অলি উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাঁর ছেলে প্রবাসী আব্দুর রহমান, সাইফুর রহমান, আয়াত সহ তিন ভাই এই বাড়িতে বসবাস করে আসছে। তাদের সাথে প্রতিবেশী আছিয়ল হকদের বাড়ির অংশ নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে হাতিয়া নৌ-বাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ দিলে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। সবশেষ বৈঠকে মীমাংসা না হওয়ায় পুনরায় বৈঠকের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ সেই বৈঠকের অপেক্ষা না করে হঠাৎ রাতের আধারে হামলা করে।
তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসীরা সবাই দাঁড়ালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। তারা পরিকল্পিত ভাবে প্রাচীর ভাঙার জন্য লোহার বড় হাতুড়ি ও হামার নিয়ে আসে। তাদের আক্রমণে তাঁর পুত্রবধূ, মেয়ে ও ছেলে আহত হয়।
এই বিষয়ে হাতিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মনির উদ্দিন জানান, রাতে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে পৌরসভার ৮ং ওয়ার্ডে প্রবাসীর বাড়িতে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাচীর ভাংচুরের আলামত পাওয়া যায়। প্রতিপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে প্রাচীর ভাঙার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়।
এই ব্যাপারে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, এই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এস আই মনিরকে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
আরএস